রবিবার , ২২ অক্টোবর ২০২৩ | ২৮শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বীরগঞ্জে হারমোনিয়াম-তবলা মেরামত করে জিবিকা নির্বাহ করছে বৃদ্ধ শুকানুর

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
অক্টোবর ২২, ২০২৩ ৫:০২ অপরাহ্ণ

বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের প্রভাবে বীরগঞ্জে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র। তাই হারমোনিয়াম-তবলা তৈরিতে জড়িতদের সেই সুদিন আর নেই। কেউ কেউ কোনোমতে পারিবারিক পেশা আগলে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ পেশা বদলে অন্য কাজ করছেন।
এখন আগের মতো হারমোনিয়াম-তবলার তেমন চাহিদা এখন আর নেই। যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে হারমোনিয়াম, তবলাসহ দেশীয় বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র।
বীরগঞ্জ উপজেলার কুমারপাড়ার এলাকার বাসিন্দা শুকানু দাস। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে আসছেন ৬৫ বছর বয়সী শুকানু দাস। ছোটবেলা থেকেই তাদের পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তিনি। আগে বাজারে বাবার সাথে দোকানে হারমোনিয়াম মেরামত করলেও বর্তমানে বয়সের ভারে বাড়িতে বসেই মেরামত করেন তার ছেলে বিজয় দাসের সাথে। উন্নত প্রযুক্তির যুগে এসে এসবের চাহিদা তেমন না থাকায় হতাশ তিনি।
এই কারিগর শুকানু বলেন, ২০ বছর আগেও হারমোনিয়াম, তবলার বেচা বিক্রি বেশ ভালো ছিল। তখন প্রতিদিনই কাজের অর্ডার থাকতো। ক্রেতারা রেডিমেটের পাশাপাশি অর্ডার দিয়েও এসব বাদ্যযন্ত্র কিনতেন। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার কমে যাচ্ছে। এখন দখল নিয়েছে ইলেকট্রিক গিটার, কিবোর্ড, পিয়ানো, ড্রামসেট, ভায়োলিনের মতো ভিনদেশি বাদ্যযন্ত্র। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল ইলেকট্রনিকের ফলে এ শিল্পে আর সুদিন নেই। কাজ-কর্মও কমে গেছে। অনেক কারিগর টিকে থাকতে না পেরে জীবিকানির্বাহের জন্য অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দুবেলা-দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য এখনও এই পেশা নিয়ে পড়ে আছি। কিন্তু বর্তমান ব্যবসার অবস্থা এতই খারাপ হয়েছে, কোনো রকমে পেটে-ভাতে টিকে আছি। কোনো মাসে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা পাই। আবার কোনো কোনো মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পাই এ দিয়ে চলতে ভীষণ কষ্ট হয়। সরকার যদি আমাদের দিকে তাকাত তাহলে আমরা এই ব্যবসাটা ধরে রাখতে পারতাম।
হারমোনিয়াম-তবলার কারিগরি শুকানু দাসের ছেলে বিজয় দাস বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসা। এক সময়ে আমার দাদু করতেন। এখন আমার বাবা করেন। আমাদের এই ব্যবসা বাপ দাদার আমলের। এখন কাজকর্ম অনেক কমে গেছে। বাবা-দাদার পুরোনো পেশা তাই ছাড়তে পারি না। কোনোমতে আঁকড়ে ধরে টিকে আছি।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ দাস বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই শুকানু দাস ও তার ছেলেকে দেখে আসছি সে এই হারমোনিয়াম, তবলা মেরামত করে আসছে। আগে এগুলো দেখতাম অনেক ভালো চলতো। কিন্তু বর্তমানে তার এদিকে কোনো কাস্টমার দেখি না। এখন বর্তমানে তার যে বেচাকেনা এতে চলতে খুবই কষ্ট হয়।
বীরগঞ্জ উপজেলা উদিচী শিল্পী গোষ্ঠী সংগঠনের সভাপতি বলেন, এখনকার নতুন প্রজন্ম এত কষ্ট করে গান-বাজনা শিখতে আগ্রহী নয়। সংগীতে হারমোনিয়াম-তবলা, ঢোল-খোল, বাঁশির ব্যবহার হ্রাস পাচ্ছে। তুলনামূলক সহজ হওয়ায় বর্তমান প্রজন্ম ইলেকট্রিক বাদ্যযন্ত্রের দিকে বেশি ঝুঁকছে। দেশীয় সংস্কৃতি বাঁচাতে যথাযথভাবে এই শিল্পের সংস্করণের দাবি আমাদের মতো সাংস্কৃতিক কর্মীদের।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু হুসাইন বিপু বলেন, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের কাছে হারিয়ে যেতে বসেছে পুরনো বাদ্যযন্ত্রগুলো। বর্তমানে যে কয়জন এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন, তারাও আর বেশি দিন থাকছেন না। ১০-২০ বছর পর হয়তো শোনা যাবে, এ পেশা বলতে কিছুই নেই।
এ বিষয়ে উপজলো চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বিসিকের মাধ্যমে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সরকারি উদ্যোগ নেওয়া খুবই প্রয়োজন।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

কুরিয়ারে আনা নকল পণ্য সরবরাহ অপরাধে ২ ব্যবসায়ীর কারাদন্ড

ভোট একবার গণনা করবেন ২য় বার করতে গেলে কেয়ামত পর্যন্ত গণনা করতে হতে পারে ——- জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান

রাণীশংকৈলে সাব রেজিষ্টারের দূনীতি – কাজি নিয়োগে মামলা

বীরগঞ্জে করলা ও ঝিঙ্গা গাছের সাথে শত্রুতা, কৃষকের মাথায় হাত

বোচাগঞ্জে আব্দুর রৌফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প

বোচাগঞ্জে দিনব্যাপী তামাক বিরোধী প্রশিক্ষণ

পার্বতীপুরে দৈনিক যুগান্তরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

বৈকালী নাট্য গোষ্ঠীর ৫০বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সুবর্ণ জয়ন্তী পালনে দিনাজপুরের সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময়

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং বাল্য বিবাহ রোধ বিষয়ক মত বিনিময় সভা

কিংবদন্তীতুল্য মহাকাব্যকার বিশিষ্ট শিশু নাট্যকার দ্বীজেন্দ্র নাথ ব্যানার্জী অবিলম্বে হারিয়ে যাওয়া দিনাজপুরের মেয়েলী গীত নিয়ে গীতি নাট্য মঞ্চায়ন করা হবে