রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ-
আর মাত্র ১দিন পরে ১৪ ফেব্রুয়ারী রোববার ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরসভা নির্বাচন, এ নিয়ে শহর জুড়ে চলছে জল্পনা আর কল্পনা, ভালবাসার দিনে ভালোবাসা দিবসে কে হবেন এই পৌর পিতা ? ইতিমধ্যে ভোটারদের দ্বাড়ে দ্বাড়ে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন প্রার্থীরা,দিয়েছেন নানান প্রতিশুতি। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুক্রবার রাত-১২ টা থেকে শেষ। শনিবার সম্পূর্ণ হবে ভোট নেওয়ার বুথ তৈরীসহ নানান প্রয়োজনীয় কাজ। প্রচারণা শেষ হলেও প্রার্থীরা বিভিন্ন ভাবে এখনো ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।
এই পৌরসভা নির্বাচনে ১২জন প্রার্থী মেয়র পদে লড়ছেন। এ পৌরসভায় দলীয় ভাবে আওয়ামীলীগ মনোনিত মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপি মনোনিত মাহামুদুল নবী পান্না বিশ্বাস এবং জাতীয় পার্টির মনোনীত আলমীগর হোসেন নির্বাচনে লড়ছেন। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ফেক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন আ’লীগের বিদ্রোহী সহ অন্যান্য স্বতন্র প্রার্থীরা। অন্যদিকে ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।
মেয়র পদে অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে আ’লীগের বিদ্রোহী হিসেবে ভোটের প্রচারণা জোরে সরে চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র উপজেলা যুবলীগের সভাপতি(বহিস্কৃত) আলমগীর সরকার (ক্যারাম বোর্ড) , পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক(বহিস্কৃত) রফিউল ইসলাম ভিপি (কম্পিউটার) সাবেক ছাত্রনেতা আ,ফ,ম রুকুনুল ইসলাম ডলার (রেল ইঞ্জিন) , উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি(বহিস্কৃত) নওরোজ কাউসার কানন ( চামুচ) প্রতীক নিয়ে, সাবেক ছাত্রনেতা সাধন বসাক (নারিকেল গাছ) উপজেলা যুবলীগের অর্থ দপ্তর সম্পাদক (বহিষ্কৃত) আব্দুল খালেক (জগ) প্রতীকে। অপরদিকে নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোকাররম হোসাইন (ইস্ত্রি) প্রতীক নিয়ে। তবে দুইজন প্রার্থী মোখলেসুর রহমান (হ্যাঙ্গার) ও আ’লীগ নেতা ইসতেখার আলী (মোবাইল ফোন) প্রতীক পেয়েও কোন নির্বাচনী প্রচারনা চালাচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায় রাণীশংকৈল পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭’শ ২ জন। যার মধ্যে নারী ভোটার ৭ হাজার ৩’শ ১২ জন এবং পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩’শ ৯০ জন। ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১৪ ফ্রেরুয়ারী আন্তজাতিক ভালোবাসা দিবস ।
পৌর নির্বাচনে স্থানীয়রা বলছেন, যিনি পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করবে এমন প্রার্থীকে এবার বেছে নেওয়া হবে। হিমেল হাওয়া আর কনকনে ঠান্ডায় ছুটে চলেছেন মেয়রসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা, আর দিয়ে যাচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। তবে বড় দুই দলের মেয়র প্রার্থীদের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করেন অনেকে।
পৌরশহরের বাসিন্দা ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: আবু বলেন, গত ৫ বছরে আলমগীর সরকার মেয়র দায়িত্ব পালন করে আসলেও পৌরশহরের দৃশ্যমান তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি বিধায় তিনি এবার নমিমেশন পাননি। রাস্তাঘাট জরাজীর্ন অবস্থায় পড়ে আছে। খাল খন্দকে ভরে গেছে। অধিকাংশ রাস্তায় বৈদ্যুতিক বাতি না থাকায়, সন্ধ্যার পরই সৃষ্টি হয় ভূতুরে অবস্থা। একই কথা বলেন ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু মিলনসহ অনেকে। গাড়ী চালক নুরু ও শরিফ হোসেন বলেন এমন প্রার্থীকে ভোট দেয়া উচিত যার দ্বারা পৌরসভার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হবে।
আ’লীগ মনোনিত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন আমি নির্বাচিত হলে মাদক মুক্ত পৌরসভা গড়ে তুলবো। রাস্তাঘাটের দ্রুত সংস্কার করবো। সবুজ বনায়নে আধুনিক পৌরসভা গড়ে তুলবো।
বিএনপি মনোনিত মেয়র প্রার্থী মাহামুদুল নবী পান্না বলেন পৌরসভা গঠন হওয়ার পর থেকে ১২ বছরে কোন উন্নয়ন হয়নি। আমি নির্বাচিত হলে রাস্তা-ঘাটসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবো।
বর্তমান মেয়র আলমগীর সরকার বলেন গত ৫ বছরে পৌর শহরের অনেক উন্নয়ন করেছি। এই কথা ভেবে পৌরবাসি আমাকে ভোট দেবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল খালেক বলেন আমি নির্বাচিত হলে পৌরসভাকে আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলবো। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে দলমত নির্বিশেষে পৌরবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবো। স্বতন্ত্র প্রার্থী সাধন বসাক বলেন আমি নির্বাচিত হলে পৌরসভাকে মাদক মুক্ত করবো। দূর্নীতি মূক্ত পৌরসভা গড়ে তুলবো। জাপা মনোনিত মেয়র আলমগীর হোসেন বলেন আমি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোকাররম হোসাইন বলেন, সু-পরিকল্পিত পরিকল্পনা নিয়ে পৌরসভার মান উন্নয়নে কাজ করবো। এবং পৌরসভাকে জবাবদিহিমুলক পৌরসভায় রুপান্তরিত করবো। স্বতন্ত্র প্রার্থী নওরোজ কাউসার বলেন, ওয়ার্ডভিত্তিক পৌরসভার মান উন্নয়নে গুরুত্ব দেব। রুকুনুল ইসলাম ডলার বলেন, বাসযোগ্য যানজট মুক্ত আধুনিক পৌরসভা গঠন করবো।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আখিঁ সরকার বলেন,ভোট হবে অবাধ সুষ্ঠ। ভোটে কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।