উত্তরের জেলা পঞ্চগড় আবারও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে বইছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। দুইয়ে মিলে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শনিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, কয়েকদিন ধরেই পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির ঘরে অবস্থান করছে। এর আগে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনদিন ১২ থেকে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রির মধ্যে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
শনিবার ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘন কুয়াশার আবরণে ঢেকে যায়। জীবিকার তাগিদে নিম্নআয়ের মানুষগুলো কাজে বের হলেও শহরের অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হন না। তবে শীত উপেক্ষা করেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ও নির্বাচনী সভা করতে ঘাম ঝরাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার থেকে হঠাৎ করে আবারও ঘন কুয়াশা নেমেছে। দুই সপ্তাহ ধরে সকালে এরকম কুয়াশা দেখা যায়নি। তবে কনকনে শীতের তীব্রতা না থাকলেও হিমেল হাওয়ার কারণেই বেশ ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে জেলার সর্বত্র।
জেলা শহরের ভ্যানচালক আজহারুল, হামিদ ও আরশেদ আলী বলেন, কয়েকদিন ঝকঝকে রোদের পর আবার কুয়াশা দেখা দিল এ অঞ্চলে। কুয়াশার কারণে ভ্যানে চড়তে চান না অনেকেই। তারা অটোরিকশায় যান। এ কারণে কামাই কম হয় কুয়াশা থাকলে।
পাথর শ্রমিক সাইফুল ও জামাল জানান, যদিও বছরের শেষে এ সময়টা চা পাতার কাজ কমে গেছে। আজ হঠাৎ করে কুয়াশা পড়েছে। তবে কি আর করব, কাজে বেরিয়েছি।
এদিকে শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠাণ্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, ‘শুক্রবারের থেকে কিছুটা তাপমাত্রা কমেছে। ঘন কুয়াশা রয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর থেকেই টানা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে পঞ্চগড়ে। এ জেলা হিমালয় বিধৌত এলাকায় অবস্থান হওয়ায় এখানে অন্যান্য এলাকা থেকে শীত আগে নামে। এ সময়টাতে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।’