অতিথি পাখিদের কোলাহলে মুখরিত দিনাজপুরের সরকার পুকুরসহ এর আশেপাশের এলাকা। নির্জন-নিরিবিলি প্রকৃতির ছায়ায় অতি প্রাচীন ‘সরকার পুকুরে’ এখন বিভিন্ন পাখির কোলাহলে মুখরিত। একই এলাকায় বিভিন্ন পুকুড়-ডোবা বা খেতেও দেখা যায় এসব পাখিদের বিচরন। শীতের শুরুতেই এই এলাকায় বিদেশী পাখিরা আসে। এখানে সুদুর সাইবেরীয়া থেকে আসা হাজারো পাখির সমাগম দেখা গেছে। সারাক্ষনই পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এখানকার প্রকৃতি।
এলাকায় পরিবেশবান্ধব পাখিদের কলকাকলিতে প্রকৃতি যেন ভিন্ন রূপ পেয়েছে। সাদা বক, বালিয়া, পানকৌড়ি, ঘুঘু, সারস, রাতচোরা পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল দিনাজপুর সদর উপজেলার শশরা ইউপির সরকার পুকুর এলাকা। এখানের বিভিন্ন পুকুরেও দেখা যায় তাদের বিচরন। সরকার পুকুরের পার এলাকায় স্থানীয় একটি বড় কবরস্থান থাকায় নির্জনতায় পাখিদের অভায়রন্যে পরিনত হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারপুকুর পাড় এলাকায় বেজি, বিভিন্ন জাতের গুইসাপ,সাপ রয়েছে। আম, নিম, ফলদ গাছ, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছের ডালে বাসা বেঁধেছে রাতচোরা, সাদা বক, পানকৌড়িরা। ওই এলাকার গাছ ও আশপাশের বাঁশঝাড়ে গড়ে উঠেছে পাখিদের অভয়ারণ্য। শীতের শুরুতে এদের আগমন ঘটেছে। বছরে পাঁচ মাস এদের দেখা যায়। সরকার পুকুর দিনাজপুর শহর থেকে সড়ক পথে ২ কিঃমিঃ দুরে মহাসড়কের পাশে। এর পাশ দিয়ে গেলেই বোঝা যাবে পাখিদের কলরব।
সরকার পুকুরে দেখা যায়, পাখী কোনটি উড়ছে, কোনটি ডাকছে। সকালে আর বিকালে পাখিদের আনাগোনায় মন জুড়িয়ে যাবে সবার। পরিবেশ বান্ধব বিকেল বেলায় পাখিদের কলকাকলীতে প্রকৃতি রুপ ফুটিয়ে তোলে। সকাল হলেই মা পাখিরা খাবারের সন্ধানে উড়ে যায় আবার সন্ধা নামার সাথে ফিরে আসে নীড়ে।
স্থানীয় পাখি প্রেমিক আলী আকবর, আব্বাস আলীসহ কয়েকজন জানায়, সরকার পুকুর এলাকাটি নির্জন এলাকা। যদিও এর পাশ দিয়ে মহাসড়ক। রয়েছে কবরস্থান। আছে পাশে একটি মাদ্রাসা। শীতের শুরুতে এখানে দেশী পাখি ছাড়াও বিদেশী ওইসব পাখি এসেছে। এখানে কয়েকমাস থাকার পর শীতের শেষে আবার পাখিরা ফিরে যায় নিজ নিজ দেশে। কিছু পাখি সারাবছরই থাকে এখানে। এখানে শতাধিক বিভিন্ন জাতের গাছ, বাশঁঝাড় রয়েছে যা তাদের আবাস স্থলে পরিনত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কয়েকবিঘার উপর অবস্থিত সরকার পুকুর কবরস্থান নিয়ে অনেক কথা প্রচলিত রয়েছে যে, এখানের পুকুরে পানি শুকায় না। আবার মেশিন দিয়ে পানি ইতিপূর্বে শুকাতে পারিনি। একসময় এর পাশ দিয়ে যেতে অনেকে ভয় পেতো। রাতে এই নিজুম এলাকায় জিনদের আনা গোনাসহ নানা কাহিনী রয়েছে বলে জানান তিনি।