পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ কাঁচা চা পাতার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ পঞ্চগড়সহ সমতলের চা অঞ্চলের চা চাষিরা। লোকসান গুনতে গুনতে এখন তাদের পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে। এরই মধ্যে অনেক চা চাষি তাদের চা বাগানের গাছ তুলে ফেলে অন্য আবাদ করেছেন। এমনই একজন চা চাষি পঞ্চগড়ে মো. শাহজালাল। বছরের পর বছর চা বাগান থেকে লোকসান গুনে তার সাত বিঘা জমির চা বাগান উপড়ে ফেলেছেন। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি; বড় একটা বিপদ দুর করতে পেরে দুধ দিয়ে গোসলও করেছেন। গতকাল বুধবার তিনি বোদা উপজেলার তেপুকুরিয়া এলাকায় নিজের তৈরি ১৩ বছরের বাগানের গাছগুলো উপড়ে ফেলে দুধ দিয়ে গোসল শুরু করলে তার শ্রমিক ও স্থানীয়রাও বিস্ময়ের সাথে দেখেন এই দৃশ্য। চা বাগান করাকে পাপ অবহিত করে তিনি তা উপড়ে ফেলে প্রায় ১০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করে পাপ মোচন করেছেন বলে দাবি করেন।
চা চাষী শাহজালাল জানান, অনেকের দেখাদেখি অধিক লাভের আশায় ২০১০ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার তেপুকুরিয়া এলাকায় নিজের কেনা ৭ বিঘা জমিতে চা বাগান করেন তিনি। শুরুতে কাঁচা চা পাতার দাম ভাল থাকায় লাভ হলেও এরপর চলে পালাক্রমে লোকসান। এ পর্যন্ত তার প্রায় ২০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেট করে চা চাষিদের জিম্মি করে রেখেছে। দিন দিন তাদের ব্যবসা ও পরিধি বাড়লেও চাষিরা গুণছেন লোকসান। প্রতি কেজি চা পাতা উৎপাদন করতে গিয়ে আমাদের খরচ হয় প্রায় ১৮ টাকা। কিন্তু সেই চা পাতা বিক্রি করে আমরা পাচ্ছি মাত্র ৮ থেকে ১০ টাকা। তার মধ্য থেকেও আবার ওজন থেকে ২০ থেকে কখনো ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাদ দিয়ে দেয়া হয় দাম। এভাবে আমরা আর টিকতে পারছি না। প্রশাসন ও চা বোর্ড কোন কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই চা কারখানা মালিকদের দৌরাত্ম থেকে মুক্ত হতেই চা বাগান উপড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেই। তার এই বাগান করার পাপ হিসেবে দুধ দিয়ে গোসল করলাম।