বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি/
সোনালু ফুল প্রকৃতির সাথে তালে তাল মিলিয়ে আপন রংয়ের ডানা মেলে সেজেঁছে নতুন রুপে। যার হলুদ উজ্জল রুপে পথগুলিকে যেমন শোভিত করেছে তেমনি তীব্র গরম আর কাঠফাঁটা রোদে হলদের অপরুপ দৃশ্য যেন ক্লান্ত পথিকের সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। হলুদ ফুলের চোখ জুড়ানো অপরুপ সৌন্দর্যের সমাহার যা সবার মনে দাগ কেটে দেয়।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পথে ঘাটে, গ্রামগঞ্জে, গাছে গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় সোনালু ফুল যার অপরুপ সৌন্দর্যে আলোকিত করছে চারপাশ। এই গাছটি গ্রীষ্মের প্রকৃতির সৌন্দর্যের একটি বড় অংশ দখল করে রাখে। এমনকি বসন্তেও এর ফুলেল রুপ দেখা যায় না। সমস্ত বসন্ত কাল হলো এর প্রস্তুতি কাল। পুরোটা বসন্ত প্রস্তুতি নিয়ে বৈশাখের শুরুতে , ইংরেজি এপ্রিল/ মে মাসের দিকে এই হলুদ সোনালু ফুল ফোটা শুরু হয়। এর হালকা মিস্টি সুবাস ,প্রজাপতি, মৌমাছি, পাখিদেরও কাছে ডেকে আনে।
বাংলাদেশ, ভারত সহ পুর্ব এশিয়ায় এই গাছটির দেখা মিলে। সৌন্দর্য বর্ধন ছাড়াও সোনালু গাছের পাতা ও বাকল বিভিন্ন ভেষজ গুণ সম্পন্ন। সোনালুর ফল লাঠির মতো গোল ও আকারে বেশ লম্বা হয়। তাছাড়া ফুল ,ফল ও পাতা বানরের খুব প্রিয়। এটি আনুমানিক ১০ থেকে ২০ মিটার উচ্চতার হয়। এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষনীয় তেমনি আছে বাহারী নামও। পরিচিত নামগুলো হলো সোনালু, সোনাইল,সোঁদাল, বান্দরলাঠি ইত্যাদি।
এক সময় বীরগঞ্জ উপজেলার পথে প্রান্তে গ্রামগঞ্জে অসংখ্য সোনালু গাছ চোখে পড়ত। কয়েক দশকের ব্যবধানে তার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। উপজেলার পৌরসভা,শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম,পাল্টাপুর,সুজালপুর, নিজপাড়া,মোহাম্মদপুর,ভোগনগর,সাতোর,মোহনপুর ও ১১নং মরিচাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় পথের ধারেও, ঝোপঝাড়ে এখনও কিছু সোনালুর গাছ চোখে পড়ে। এ গাছ গুলো প্রাকৃতিক ভাবেই জন্ম হয় ও বেড়ে ওঠার সময় তেমন চোখে না পড়লেও ফুলফুটার সঙ্গে সঙ্গেই সবার দৃষ্টি আকর্ষিত হয় প্রশান্তিতে হৃদয় মন ও চোখ জুড়িয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এ গাছগুলো পরিবেশের জন্য উপকারী ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। পাশাপাশি এর ফুল চমৎকার ও দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় শোভা বর্ধনকারী হিসেবে সকলের নিকট জনপ্রিয় এবং এই গাছ থেকে ভালো মানের কাঠও পাওয়া যায়।
বীরগঞ্জ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুক্তার হোসেন জানান, সোনালু ফুল যেমন মানুষের মনে প্রশান্তি আসে তেমনি এর কাঠ ও অনেক মুল্যবান। বিলুপ্তি প্রায় এই গাছ নতুন করে লাগানো প্রয়োজন এবং যে গাছ গুলো এখনো টিকে আছে তা রক্ষার দাবী জানান, তা না হলে নতুন প্রজন্মের কাছে এটা শুধু গল্পের মতো মনে হবে।