চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কায়েমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামসুল হুদার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা এ প্রধান শিক্ষক বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পরিবারের লোকজনকে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের সনদপত্র প্রদান বাবদ চাঁদা আদায় ও আর্থিক অনিয়ম করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, সামসুল হুদা গত ২০১০সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কায়েমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর তিনি একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ না করে আর্থিক লাভের দিকে মনোনিবেশ করেন। এজন্য তিনি পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৯জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন শিক্ষক ও ৬ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
নিয়োগপ্রাপ্তদের পরিচয় সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক সামসুল হুদা জানান, আয়া পদে তাঁর চাচি ইয়াসমিন আক্তার, নৈশপ্রহরী পদে চাচাতো ভাই ওমর ফারুক ও অফিস সহকারী পদে শ্যালক মজনু ইসলামকে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়াও নিজের পছন্দের ব্যক্তি রাকেশ রায়কে লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি সমঝোতার মাধ্যমে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামের ভাই শাহাদাত হোসেনকে নিয়োগ দিয়েছেন।
এদিকে, কোনো শিক্ষার্থীর সনদপত্রের প্রয়োজন হলে বাড়িতে গিয়ে টাকার বিনিময়ে সনদপত্র নিতে হয় বলে একাধিক শিক্ষার্থী জানান।
বিদ্যালয়ের সাবেক কর্মচারী হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ বিদ্যালয়ে চাকুরি করেছি।তখন ভালোভাবেই চলছিল বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম। কিন্তু এই প্রধান শিক্ষক যোগদান করার পর থেকেই বিদ্যালয়ের করুণ দশা শুরু হয়েছে। নিজ পরিবারের লোকজনকে নিয়োগ দিয়ে মনগড়াভাবে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল হুদা বলেন, আমার পরিবারের সদস্য ও সভাপতির ভাইকে তাঁদের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. তাজ উদ্দীন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলাম। ঘটনার সত্যতা কিংবা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।