মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে জেলা তথ্য অফিস দিনাজপুর এর আয়োজনে স্কাউট ও সুধিজনদের নিয়ে “এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন-জরায়ু মুখ ক্যান্সার রুখে দিন”-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে স্কাউট ও সুধিজনদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম-২০২৪ এর সম্পর্কে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা তথ্য অফিস দিনাজপুর এর সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ আব্দুল আলীম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে অবহিতকরণ সভার উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নুর-এ-আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ কাওছার আহমেদ, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন শংকরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জয়নাল আবেদিন, দিনাজপুর বালিকা আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, আদর্শ কলেজের প্রভাষক রুপা রানী দাস। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন জেলা তথ্য অফিসের উচ্চমান সহকারী মোঃ রোস্তম আলী সরকার। বক্তারা বলেন, এইচপিভি টিকা নারীর জরায়ু মুখ ক্যান্সারে মৃত্যু কমিয়ে আনতে যথেষ্ট কার্যকর ভ‚মিকা রাখবে। আক্রান্তরা সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী হয়ে থাকে। ৬০ বছরের পরও এ রোগ হতে পারে। ঔষধ প্রতিরোধকের চেয়ে আচরণগত প্রতিরোধকের দিকে বিজ্ঞানীরা বেশী গুরুতারোপ করেছেন। সাধারণত ১০ বছর বয়সের পর থেকে জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ টিকা নেওয়া যায়। মোট ৩ ডোজ টিকা নিতে হয়। প্রথম ডোজের একমাস পর দ্বিতীয় ডোজ এবং প্রথম ডোজের ছয় মাস পর তৃতীয় ডোজ নিতে হয়। টিকা গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত পরীক্ষা করলে জরায়ু মুখ ক্যান্সার আক্রমণ হার কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ ছাত্রদের এব্যাপারে যথেষ্টা সচেতন হতে হবে। এ কাজটি স্কাউট রোভাররা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং সচেতনতামূলক সভায় সকলকে সচেতন করার দায়িত্ব নিতে পারে।
বিরামপুর
বিরামপুর (দিনাজপুর): দিনাজপুরের বিরামপুরে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে বিরামপুর পৌরসভার আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সাথে এক এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্দিষ্ট বয়সী ও নির্ধারিত শ্রেণিতে অধ্যায়নরত কিশোরীরা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকা কার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। পরে ওই কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ নিতে হবে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে নির্ধারিত কেন্দ্রে এই টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলবে।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় উক্ত প্রোগ্রামের সভাপতিত্ব করেন, বিরামপুর পৌরসভা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত তাসনিম আওন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রসূল রাখি, মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাহাজুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিপুল কুমার চক্রবর্তী, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শমসের আলী মন্ডল, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুনা লায়লা, আইসিটি প্রোগ্রামার পাপিয়া নাসরিন, বিরামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম প্রমূখ।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন,জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আগামী ২৪ অক্টোবর হতে বিনামূল্যে বিরামপুর উপজেলার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন,“বাল্যবিবাহ, কম বয়সে সন্তান প্রসব, একাধিক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী, যেসব নারী প্রজনন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এবং সমস্যার প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নেননি তাদের জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে।” এজন্য কিশোরীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার বিষয়ে লক্ষ্য রেখে যেন নির্ধারিত বয়সের কোন কিশোরী এইচপিভি টিকা গ্রহণ করা থেকে বাদ না পড়ে সেজন্য শিক্ষকদের ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের প্রতি তিনি আহŸান জানান।