মিজানুর রহমান,হরিপুর প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৩ নং বকুয়া ইউনিয়নের চাপধা সরকারি পুকুর থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী ভূমি কমিশনার আব্দুল করিম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় এক মাস ধরে অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের কারণে চাপধা সরকারি পুকুর পাড়ের ৪৭ টি পরিবার হুমকির মুখে পরেছে । তবে বালু উত্তোলন কারী দুই জনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সরকারি পুকুর থেকে অবৈধভাবে কেনো বালু উত্তোলন করা হচ্ছে জানতে চাইলে রুহিয়া গ্রামের মৃত সহিম উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা বলেন, আমি একাই কেনো তুলব এটা তো ঈদগাহ জন্য তোলা হয়েছে৷ চাপধা ঈদগাহ কমিটি তো নেই মসজিদ কমিটি সভাপতি রকিম আর্মি সব কিছু বলতে পারবে৷ বালু উত্তোলনের বিষয়ে ইউএনওর কাছে অভিযোগ হয়েছিল৷এই বিষয়টা সবাই জানে৷ আমরা ইউএনও অফিসে বসছিলাম৷ বর্ষা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ছিল৷ এক সাথে বসে সব ঠিক করেছি৷আমি হচ্ছি এর প্রধান ৷ সোহেল রানা বলেন সরকারি পুকুরটি আমার নামেই লিজ আছে৷ বালু উত্তোলন করলে কোনো সমস্যা নাই৷ এতে আরো মাছের জন্য ভালো৷ তিনি হরিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে বলেন।
চাপধা মসজিদ কমিটির সভাপতি রকিম উদ্দিন বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেন৷ ঈদগাহ উন্নয়নের জন্য বালু উত্তোলন করা হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, বিষয়টি ইউএনওর নলেজে দেওয়া আছে৷ বালু উত্তোলনের অনুমতি আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন,যদি ঈদগাহের কাজ হয় তাহলে দিবে৷ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন হ্যাঁ অনুমতি দিয়েছে।
৩নং বকুয়া ইউনিয়নের রহিয়া গ্রামের মৃত চান মোহাম্মদের ছেলে রকিম(সাবেক আর্মি) ও মৃত সহিমুউদ্দীনের ছেলে সোহেল রানা দু-জন মিলে সিন্ডিকেট করে বালু বিক্রি করছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শরিফ উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন রুহিয়া ঈদগাহ কমিটি ঈদগাহ উন্নয়নের জন্য বালু গুলো তুলেছিল কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার বালু গুলো সিজ করে সরকারি ঘর নির্মাণের জন্য রেখে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে রকিম আর্মি ও সোহেল রানা আবারও বালুগুলো বিক্রি করছে।
আজ রবিবার(২১) মার্চ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এখনো পুকুরে ড্রেজার মেশিন বসানো রয়েছে। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একজন জানান,বালুগুলো ইউএনও সাহেব সিজ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে ৩নং বকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বর্ষার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এব্যাপারে ইউএনও সাহেব ভালো বলতে পারবেন।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল করিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বালু গুলো সিজ করার কথা অস্বীকার করে বলেন সরকারি কাজে বালুগুলো যাচ্ছে। অভিযুক্তরা বালুগুলো বিক্রি করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এব্যাপারে মোবাইলে কথা বলতে পারবো না সাক্ষাতে বলতে হবে।