ঘোড়াঘাট প্রতিনিধি \ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ জনতার লাঠি মিছিল শেষে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের কথিত পীর রহিম শাহ ভান্ডারীর মাজারে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
এসময় হাজার হাজার তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ, লাঠি মিছিল, ভাংচুর ও অগ্নি-সংযোগে অংশগ্রহণ করেন। মাজারের সামনে মঞ্চ ও বড় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তদের জন্য শামিয়ানা দিয়ে তিনটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল। ২ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত বাৎসরিক ওরসের আয়োজন করে মাজার কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় ঘোড়াঘাটের সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে দলমত নির্বিশেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ ও লাঠি মিছিল বের হয়ে আফছারাবাদ-কলোনী এলাকায় অবস্থিত মাজারে গিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় মাজার এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা ও ওরসের নামে গান-বাজনা, খাবার আয়োজনের বিভিন্ন সামগ্রী ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
স্থানীয় জনতা অভিযোগ করে জানান,কথিত পীরের এই মাজারে অসামাজিক কার্যকলাপ, জিকিরে নারী-পুরুষ একত্র হয়ে গান-বাজনা ও ভÐামি করে থাকে।এগুলিকে কোনভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। ঘোড়াঘাটের সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকায় রহিম শাহ বাবা ভাÐারীর মাজারে প্রতিবছর ওরশের নামে গান-বাজনা, মাদক সেবনসহ অশ্লীল কর্মকাÐ চলে আসছে। এর প্রতিবাদ করলেও তারা সেটি বন্ধ না করে ২ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত বাৎসরিক ওরসের আয়োজন করে মাজার কর্তৃপক্ষ।
তারা আরও বলেন, এই অনৈতিক কাজ বন্ধের দাবিতে এর আগে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ করেছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসিসহ উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছি। কিন্তু কোনো ধরণের ব্যবস্থা না নেওয়া হয়নি। ইসলাম ও ধর্মের নামে কোনো ধরণের নোংরামি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা কোনো ভাবেই বরদাস্ত করবেনা। এর প্রতিবাদে শুক্রবার লাঠি মিছিল বের করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
এসময় খবর পেয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আ. ন.ম নিয়ামত উল্লাহ, ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক, সেনাবাহিনী সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল ইসলাম বলেন, কথিত পীরের ওই মাজারে কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে মাজারের সামনে মঞ্চ ও বড় তোরণ, শামিয়ানা দিয়ে তৈরী প্যান্ডেল, টিনের ছাপড়াঘর পুড়ে যায় এবং ভাঙচুর হয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শুক্রবার রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনার পুনরাবৃতি না ঘটে এজন্য শনিবার ওই এলাকায় টহল পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কেউ কোন অভিযোগ করেনি। সেখানে ওই মাজারের কোন লোকজন নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, বিরাহীমপুর গুচ্ছগ্রাম মাজারে উত্তেজিত তৌহিদি জনতা হামলা করে মাজারের বিভিন্ন অবকাঠামোতে আগুন লাগিয়ে দেয়া সহ ভাংচুর করেছে। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আনা হয়।