বিকাশ ঘোষ, দিনাজপুর: পবিত্র ঈদ উল ফিতরের জামাতের জন্য প্রশ্নত আয়তনের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এশহীদ বড় ময়দান। বিশাল এই ময়দানে ঈদুল ফিতরের দিন সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গোর-এ শহিদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে বড় কোনো মিম্বর ছিল না। ২০১৭ সালে ৫২টি গম্বুজ নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। গম্বুজগুলোর দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাবের (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এত বড় ঈদগাহ মাঠ দ্বিতীয়টি নেই। এর আগে ঈদগাহের মধ্যে দিনাজপুর স্টেশন ক্লাব থাকলেও পরবর্তীতে তা অন্যত্র সরানো হয়েছে। ফলে বেড়েছে ঈদগাহের আয়তন। সিরামিকস দিয়ে পুরো মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে। ঈদগাহের মিনারকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম ফুলের গাছ রোপণ করেন। এছাড়াও ঈদগাহে ঘাসের জন্য বেশ কিছুদিন থেকে পানি সেচের ব্যবস্থা করেন।
২০১৭ সাল থেকেই প্রতিবারে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে দুই বছর ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে। এই ঈদগাহে গত প্রায় ১ মাস ধরে চলছে প্রস্তুতির কাজ। ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে প্রস্তুতি। দিনাজপুর সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুসল্লিদের জন্য ৩শ অজুখানা, ৪০টি টয়লেট ও খাবার পানি সরবরাহের জন্য ৫টি পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। ঈদগাহ পরিদর্শন রিদর্শন করেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ। পরিদর্শন শেষে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত সম্পন্নে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি বলেন, সাড়ে ৩ শ পুলিশ সদস্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে মোতায়েন থাকবে। ডিবি ও ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে এই ঈদের জামাতে আসতে পারে। এই বিশাল জামাতে মানুষ যাতে নামাজ আদায় করতে আসে-সেজন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান পুলিশ সুপার।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহৎ এই ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ইতিমধ্যেই সবরকম প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। তিনি মুসল্লীদের নির্বিঘ্নে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায়ের আহ্বান জানান।