পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ভূয়া ব্যাংক একাউন্ট তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতারক চক্রের চেক জালিয়াতির মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, জমির জাল দলিল তৈরী করে জমি জবর দখল করার প্রতিবাদে পঞ্চগড়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের পুরাতন ক্যাম্প এলাকায় পঞ্চগড় মিডিয়া হাউজ হলরুমে ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ভূক্তভোগী মির্জা আব্দুল বাকী জানান, ২০২০ সালে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৩০.৬২ শতক জমির মধ্যে ৫ শতক জমি বিক্রি করেন তিনি। পরে ২০২২ সালে জেলা শহরের মিঠাপুকুর এলাকায় ভূক্তভোগীর প্রায় ২৫.৬২ শতক জমি পারিবারিক প্রয়োজনে বিক্রি করতে গেলে দেখেন স্থানীয় বিসিকনগর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ দেলদার রহমান দিলু জমির জাল কাগজ তৈরী করে জমি জবর দখলে নিয়েছেন। এর আগে তিনি ২ শতক জমিও দখলে নেন। ২০১২ ও ২০১৬ সালে জমি মাপজোক করতে গেলে নানা টালবাহানা শুরু করে কাজের অজুহাত দেখান। কেননা তার মিঠাপুকুর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ হতে বের হবার তেমন কোন রাস্তা ছিল না।
পরে দেলদারের জাল করা দলিল বাতিলের মামলা করা হলে আদালত নিষেধাজ্ঞা ওই জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।পরে দেলদার রহমান দিলু জমি কব্জা করতে না পেরে ভূক্তভোগী ও তার জমি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা এবিএম জয়নাল ইসলামের নামে পৃথকভাবে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অগ্রণী ব্যাংক, পরিবেশ ভবন শাখায় দুইটি ভূয়া একাউন্ট খোলেন। সেখান থেকে চেক বই নিয়ে তা ব্যবহার করে পঞ্চগড়, বরিশাল, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চেক ডিজওনারের মামলা দায়ের করেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে দেলদার রহমান দিলুর অসংখ্য মানুষজনকে চেক ডিজওনারের হয়রানি করছেন। এছাড়া নিজস্ব লোকজনকে দায়ী করে মিথ্যা মামলা দিয়ে বেকায়দায় ফেলেন। এ ঘটনায় প্রতারক চক্রের সদস্য আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ভুয়া হিসাব খুলে সেখানকার চেক নিয়ে প্রতারণার মামলা করায় অভিযোগে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা করা হয়। ওই মামলার তদন্তে ডিবি অগ্রণী ব্যাংক, পরিবেশ ভবন শাখা, আগারগাঁও, ঢাকার ব্যবস্থাপক ফিরোজ উদ্দিন, প্রিন্সিপাল অফিসার শাহাবুদ্দিন, দেলদার রহমান দিলু, চেক জালিয়াতির মামলার বাদী আনোয়ার হোসেনসহ পাঁচ জনকে দায়ী করে প্রতিবেদন দেয়ার পর চারজন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। বাকি একজনের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জালিয়াতি ও প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ সংঘবদ্ধ চক্রের প্রতিটি সদস্যকে আইনের আওতায় এনে দ্রæত বিচারসহ দেলদার রহমান গং কর্তৃক তৈরীকৃত জাল দলিল বাতিল করে জবরদখলকৃত জমি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সরকারের উর্ধ্বতন মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এতে ভূক্তভোগী আসেকি রব্বানী, এবিএম জয়নাল ইসলাম খানসহ জেলায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।