আনোয়ার হোসেন আকাশ, ঠাকুরগাঁও থেকে:
ঠাকুরগাঁওয়ে গত দুইদিনে ২০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব, ঠাকুরগাঁওয়ের বক্ষব্যাধি হাসপাতালের জিন এক্সপার্ট পরীক্ষা এবং সদর হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতালগুলো থেকে পাওয়া অ্যান্টিজেন পরীক্ষার প্রতিবেদন সমন্বয় করে মোট শনাক্তের সংখ্যা জানা গেছে। এই সময়ে করোনা আক্রান্ত জেলার দুজন বাসিন্দা মারা গেছেন। আজ শনিবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলা সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, করোনা সংক্রমণের এ হার উদ্বেগজনক। কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করা না গেলে সংক্রমণের হার কমবে না। মহামারির এ দুঃসময়ে জেলাবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।
নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছেন ৫৭ জন, পীরগঞ্জে রয়েছেন ১৪ জন, বালিয়াডাঙ্গীতে ১২ জন, রানীশংকৈলে ১১ জন ও হরিপুরে ৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। এই সময়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পীরগঞ্জ উপজেলার ৭৫ বছর বয়সী একজন পুরুষ এবং রানীশংকৈল উপজেলার ৪৫ বছর বয়সী এক নারী রয়েছেন।
আগের ২৪ ঘণ্টায় ৬০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের দিনের তুলনায় আজ শনাক্তের হার বেড়েছে ১৭ শতাংশ।
এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৮২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের গড় হার দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৫ জন।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঠাকুরগাঁও জেলায় আজ শনিবার লকডাউনের তৃতীয় দিন চলছে। জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে তল্লাশিচৌকি বসানো হলেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাচল করছে।
লকডাউন ঘোষিত ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি মাছের আড়তে গাদাগাদি করে মাছ কিনছেন ক্রেতারা।
চলতি মাসে জেলায় হঠাৎ করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। এ অবস্থায় ১৭ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত জেলায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি। এরপরও সংক্রমণের হার বেড়ে চলায় গত বুধবার এক বৈঠকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জেলায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি।
ছুটির দিন হওয়ায় আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল কম দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ। শহরের প্রধান সড়কে একাধিক স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। শহরের কালীবাড়ি বাজারের মাছের পাইকারি আড়ত, মাংসের দোকান ও সাধারণ পাঠাগারের আমের বাজারে লোকজনের সমাগম দেখা গেছে। রাস্তায় যানবাহন খুব কম থাকায় অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে ছুটছেন।