পীরগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জে আতœহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে। অসুস্থতা, পেট ব্যথা ও মায়ের উপর অভিমান করে গত ৫ দিনে কলেজ ছাত্রী, কিশোরী ও বৃদ্ধা সহ ৫ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আতœহত্যা করেছে। থানা পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের কিসমত সৈয়দপুর গ্রামের মৃত কুলদা রঞ্জন রায়ের ছেলে মহেশ চন্দ্রন রায়(৪০) বাড়ির পাশে^ আম গাছের ডালে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আতœহত্যা করে। তার আতœহত্যার কারণ জানা যায়নি। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সেনগাও ইউনিয়নের দস্তমপুর গ্রামে বেলাল হোসেনের ছেলে জীবন আলী (২৫) নিজ শয়ন ঘড়ে তীরের সাথে মাফলার দিয়ে আতœহত্যা করে। একই দিনে উপজেলার নাকফুল গ্রামের মজিরুলের কন্যা রুবা আকতার (১৮) শয়ন ঘড়ের তীরের সাথে ওরনা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আতœ হত্যা করে। রুবার মামা আল মামুন পুলিশকে জানায়, তার ভাগনি শিবগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে এইচএসসি’র ছাত্রী। পারিবারিক কাজ কর্ম নিয়ে দুপুরে রুবাকে বকাবকি করে তার মা। এরপর রুবার মা ও বাবা গরুর জন্য ঘাস কাটতে বাড়ির বাইরে যায়। সেই ফাকে মায়ের উপর অভিমান করে রুবা আতœহত্যা করে। জীবন আলীর পিতা বেলাল হোসেন থানায় লিখিত ভাবে জানায়, তার ছেলে মাদকা সক্ত ছিল। নেশার জন্য ঐ দিন সকালে জীবন তার মায়ের কাছে টাকা চায়। না দেওয়ায় দুপুরে সে আতœহত্যা করে।
এদিকে গত ১২ মার্চ সন্ধায় উপজেলার ভেলাতৈড় ভদ্রপাড়া গ্রামের সবুজ আলীর কন্যা শোনিয়া আকতার (১২) ওরনা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আতœহত্যা করে। একই দিন রাত ১০ টার দিকে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের রকনাল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী সাতো বালা(৭০) রশি দিয়ে শয়ন ঘড়ের বারান্দায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আতœহত্যা করে।
শোনিয়ার দাদা আব্দুল জলিল থানায় জানান, শোনিয়ার পিতা সিলেটে কাজ করে। মা পালিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছে। দাদার বাড়িতে মানুষ হচ্ছিল শোনিয়া। ৬/৭ মাস আগ থেকে শোনিয়া পেট ব্যাথায় ভুগছিল। এ কারণে সে আতœহত্যা করে। সাতো বালার ছেলে বিনোদ চন্দ্র রায় পুলিশকে জানায় তার মা অসুস্থ ছিল। যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে আতœহত্যা করে।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দোয়েল এর চেয়ারম্যান প্রভাষক তারেক হোসেন বলেন, পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হয়ে যাওয়া, সামাজিক অবক্ষয় ও মানষিক সমস্যার কারণে অতœহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এর জন্য কাউন্সিলিং দরকার।
ঠাকুরগাও জজ কোর্টের আইনজীবী আবু সায়েম বলেন, ইন্টারনেট আসক্তি, সামাজিক বিশৃংখলা, হতাশা ও আবেগ থেকেই এমটা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল জব্বার বলেন, মানষিক অবস্বাদ গ্রস্থরা নিজের উপর আতœ বিশ^াস হারিয়ে ফেলে আতœহত্যার পথ বেছে নেয়। তাদের বোঝাতে হবে। মনে আতœ বিশ^াস জাগাতে হবে। তবেই এ প্রবণতা কমানো সম্ভব।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একেক দিন উপজেলার একেক জয়গায় আতœহত্যার ঘটনা ঘটছে। বুঝা যাচ্ছে না, কেন যে এমন হচ্ছে?