ফরিদ আহমেদ বোচাগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধি।
বিরলে বিধান দত্ত শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষক-২০২২ নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে তাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত করা হয়। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচনে শিক্ষকের যোগ্যতা, দক্ষতার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার, সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, মৌলিক গবেষণা, প্রকাশনা ইত্যাদি বিষয়ও বিবেচনা করা হয়। পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উৎসাহ দেন সুদূর প্রসারী হতে, সার্বিক জ্ঞান আহরণে সফল হতে এবং প্রকৃত মানুষ হতে। তিনি সকলের কাছে আশির্বাদ ও শুভকামনা প্রার্থনা করেন যেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বপ্ন, জ্ঞান ও আলোর বীজ বপন করে যেতে পারেন।
দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন সুগার মিল রোডে জন্ম। পিতাঃ মধূ সূদন দত্ত ও মাতাঃ হেনা দত্ত।
সেতাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ অনার্স ও এমএ সম্পন্ন করেন। রাজধানী ঢাকা’র একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষায় এম এ ডিগ্রী অর্জন করেন। রংপুর থেকে বি এড ও এম এড সম্পন্ন করেন ও রংপুর আইন কলেজ থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। ১৯৭১ এর গণহত্যা ও নির্যাতনের উপর পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্স সম্পন্ন করেন।১৯৯৮ সালে সালে সেতাবগঞ্জ মহিলা কলেজে ইংরেজি বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করে ২০০২ খ্রিঃ পর্যন্ত সুনাম ও সফলতার সাথে শিক্ষকতা করেন।
২০০৩ খ্রিঃ আমেরিকার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা প্রকল্পে অনুবাদক হিসাবে যোগ দিয়ে ২০১০ খ্রিঃ পর্যন্ত গাইবান্ধা ও রংপুর অঞ্চলে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা প্রকল্পেও খন্ডকালীন অনুবাদক হিসাবে কাজ করেন।
২০১০ খ্রিঃ বিরলের বোর্ডহাট মহাবিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পাশাপাশি তিনি দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণের কোর্স কো-অর্ডিনেটর এবং দিনাজপুর কে বি এম কলেজ ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের টিউটর।
বিরল সায়েন্স একাডেমি (জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান ক্লাব হিসাবে পুরস্কার প্রাপ্ত) এর প্রধান সমন্বয়কারী। বিরল ইংলিশ স্পিকিং ক্লাব এর প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী দিনাজপুর জেলা শাখা’র সাংগঠনিক সম্পাদক । মুক্তিযুদ্ধের গবেষক হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা গ্রন্থ- “রাজবাটি গণহত্যা” বইটি তিনি লিখেছেন। বঙ্গবন্ধু প্রফেসর মুনতাসীর মামুনের সম্পাদনায় ১৯৭১ঃ গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর বইটি প্রকাশ করে। এছাড়া প্রকাশিত গ্রন্থ বিধানের ছড়াগুলি ২০২০, বিধানের ছড়াগল্প ২০২১, বিধানের ছড়াকাব্য ২০২২ এ অমর একুশে বইমেলা থেকে প্রকাশিত হয়। জাতীয় সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন মেধাভিত্তিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন নিয়মিত। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচীর সফল সংগঠক। উপস্থাপক, ছড়াকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবেও রয়েছে খ্যাতি। দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং কর্মজীবনে তাঁর অসংখ্য শিক্ষার্থী সফলতার ছাপ রেখেছে।
সহধর্মিণী হসন্তিকা রায় সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। কন্যা মুক্ত বিহঙ্গ দত্ত ও পুত্র বিমুগ্ধ দত্ত।
আদর্শ শিক্ষকের প্রতীক হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য করে গড়ে তুলতে চান এবং তাদের মাঝেই বেঁচে থাকতে চান।
উল্লেখ্য, বিধান দত্ত ২০১৯ সালেও বিরল উপজেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর এ অর্জনে বোচাগঞ্জ উপজেলায় ৯১ বন্ধুদের নিয়ে গঠিত সামাজিক সংগঠন গোল্ডেন ২৫ আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।