আগামী ২৯ অক্টোবর রংপুরে বিএনপি’র বিভাগীয় গনসমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিএনপি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় দিনাজপুর শহরের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল জানান, রংপুরের গনসমাবেশ সফল করতে বেগম খালেদা জিয়া’র শৈশব ভূমি দিনাজপুর থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০হাজার নেতাকর্মীর অংশ গ্রহন করার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। বাস, ট্রাকসহ গণপরিবহন বন্ধ করা হলেও সমাবেশে অংশ গ্রহনে কোন বাধাই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না তাদের। বৃহস্পতিবার থেকেই রংপুর গনসমাবেশে যাওয়া শুরু হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
এসময় তিনি ৫-৬ হাজার মোটরসাইকেল ছাড়াও বাইসাইকেল, ভ্যান রিক্সা, নছিমন, পাগলু এবং ট্রেনেসহ বিভিন্নভাবে সমাবেশে যোগ দেবেন নেতাকর্মীসহ সমর্থকেরা। অংশ গ্রহনকারিদের থাকা খাওয়ার আগাম ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।
জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. মোঃ মোফাজ্জল হোসেন দুলাল আরও জানান, রংপুরে বিভাগীয় গনসমাবেশ সফল করতে দিনাজপুরের তৃণমুল পর্যায়ে প্রচারনায় নেতাকর্মীদের মাঝে গণজাগরনের সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসনসহ কোন পক্ষ থেকে বাধা আসেনি বলেও জানান দলের নেতারা। তবে বাধা আসলেও অংশ গ্রহনকারিদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে না বলে দাবি করেন তারা।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির‘র সাধারন সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি। এসময় লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্য ছিল গণসমাবেশে গনমানুষের ঢল যাতে না নামে। তিনি বলেন, খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সরকার মূলত সান্ধ্য আইন জারি করেছিল। সমাবেশকে বাধাগ্রস্থ করতে সরকারের নির্দেশে আন্তঃজেলা রুটের গণপরিবহন বন্ধ করেছিল। এই ধর্মঘটে মানুষ চরম দূর্ভোগে পরে। সমাবেশে যাতে লোকসমাগম না হয়, তার সকল চেষ্টাই করে যাচ্ছে এই ফ্যাসিস্ট সরকার। গণপরিবহনে জনগন তাদের গণঅধিকার আদায়ে যেতে পারল না ভেবে আজকে খুবই অনুধাবন করছি মাওলানা ভাসানীর বিখ্যাত উক্তি “কৃষকের যে ফসল ঘরে ওঠে না, তা খেতেই জ্বালিয়ে দাও।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ৩টি সমাবেশে বাধা দিয় জনস্রোতকে আটকাতে পারিনি,এবারো পারবে না। আওয়ামী শাসনে গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তারা কোনদিনই বিরোধী দলকে বরদাস্ত করতে পারেনি ও বিরোধীদলের ইতিবাচক সমালোচনাকে কখনোই গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। বরং তারা নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে বিরোধীদলের মূখ বন্ধ করে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে।
এসময় তিনি বলেন, এই সমাবেশে জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের অর্ধলক্ষাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা অংশ নেবেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান,এ পর্যন্ত দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনায় কোনোরুপ বাধা বিপত্তির সন্মুখী হননি তারা। তিনি আরো জানান,সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিদের্শনা অনুযায়ী জেলা এবং উপজেলা কমিটির স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে যাতায়াত নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে ফ্যাসিষ্ট সরকারের দমন-পিড়ন উপেক্ষা করে বিগত ৩টি গনসমাবেশের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগন এখন সজাগ রয়েছে তাই আওয়ামী সরকারের সকল বাধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে বিএনপি‘র নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফল করবেই। বিগত সমাবেশের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করার জন্যে দলীয় দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন পন্থায় ইতিমধ্যেই চলে গেছেন এবং যাবেন,কোনো বাধাই সমাবেশে যাওয়া আটকাতে পারবে না। বিএনপির উপস্থিত নেতৃবৃন্দ রংপুরের গনসমাবেশ সফল করা জন্যে স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের নিকট সবধরনের সহযোগীতা প্রত্যাশা করেন।
এসময় সময় সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড.মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মোকাররম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুন্না, আনিসুর রহমান বাদশা, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মাহবুব আহমেদ, খালেকুজ্জামান বাবু, আখতারুজ্জামান জুয়েল, হাসানুজ্জামান উজ্জল, মোস্তফা কামাল মিলন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মন্ডল বকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাইয়ূমসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মহিলাদল, শ্রমিকদল ও বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসহযোগি সংগঠনের নেতাকের্মী উপস্থিত ছিলেন।