বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর শহরের সম্ভ্রান্ত ও সু-পরিচিত ব্যক্তি, অঢেল মুল্যবান ভুসম্পত্তির মালিক ছিলেন মরহুম সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ মাষ্টার। তাঁর ৩ পুত্র ৪ কন্যা। এক কন্যা ডাঃ গুলশান আরা ক্যানাডা প্রবাসী ও সেখানকার সিটিজেনশীপ।
মরহুম সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদের বড় মেয়ে জান্নাতুন নুরী, মেঝ ছেলে মামুনুর রশিদ, মেয়ে সেতারা বেগম, ছোট ছেলে কামরুজ্জামান বাবু এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, পিতা মৃত্যুর পর ভাই হারুন উর রশিদ সংসার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।
সেই সুবাদে একক ক্ষমতাবলে তিনি কৌশলে তাদের ওয়ারিশান সম্পত্তি একের পর এক বিক্রি ও হস্তান্তর করেছেন এবং জমি বিক্রির টাকা সারা জীবন বসে বসে খেয়ে শেষ করেছেন।
তাদের পৌর শহর সুজালপুর মৌজাতেই ২১ একর জমির মধ্যে ১৮ একর বিক্রি করে ফেলেছেন।
বসতবাড়ি ও সরকারী কলেজের পাশে পুকুরে অবশিষ্ট কিছু জমি এখনো রয়েছে।
জমিগুলো বন্টক দলিল না হওয়ার ওয়ারিশদের মাঝে কলহ বিবাদ শুরু হয়, তারা মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ে। ফলে হারুন উর রশিদের জমি বিক্রি করে খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
জীবদ্দশায় হারুনের গর্ভধারিণী মা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাকে জমি বিক্রিতে বাঁধা করলে সে তার মাকেও মারধর করে নিজেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
দির্ঘদিন জেলা শহরে ভাড়া বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করে।
সম্প্রতি আবারও ফিরে এসে আমাদের যৌথ কারবার অরোরা এগ্রো ফার্মের অফিস ঘরে জোর পুর্বক তালা ভেঙ্গে ঢুকে বসবাস শুরু করে।
বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়ে হারুন উর রশিদ তার স্ত্রী সাফেয়া রশিদের নামে বসতভিটার ৪৫ শতাংশ জমির কাগজপত্র সৃষ্টি করছে মর্মে আমরা বিভিন্ন লোকমুখে জানতে পারি।
তার স্ত্রীর নামীয় দলিল দস্তাবেজ তঞ্চকতা, যোগসাজশি, অবৈধ, বানোয়াট, যার আইনগত কোন ভিত্তি নাই।
আবাসন সংলগ্ন যৌথ কারবার অরোরা এগ্রো কোম্পানির ম্যানজিং ডিরেক্টর কামরুজ্জান,যাহা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে দায়বদ্ধ।
জমির সিংহভাগ সকল ওয়ারিশ কর্তৃক ঐক্যবদ্ধভাবে উক্ত ব্যাংকে মর্গেজ দেওয়া রয়েছে।
স্ত্রীর নামে সৃজন করা ঐসব অবৈধ কাগজপত্র মুলে হারুন উর রশিদ জমি বিক্রির নামে বেশ কয়েক জনের নিকট মৌখিক বায়না শর্তে ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং চুক্তিভঙ্গ ও ক্রেতাদের টাকা আত্মসাত করেছে।
দির্ঘদিন যাবত জমি বিক্রির চেষ্টা করলেও প্রতিপক্ষের প্রবল বাধার মুখে পেরে উঠেনি হারুন।
কিন্তু সম্প্রতি ১২৮৯ নম্বর দাগে ২৫ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ যেখানে মামুনুর রশিদ মামুনের বাড়ি, হারুন তার স্ত্রীর মর্মে দাবী করে বাড়িসহ ঐ জমি ৪০ লাখ টাকায় জনৈক প্রভাবশালী ইঞ্জিনিয়ারের কাছে বিক্রি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
বিষয়টি জানতে পেরে মামুনুর রশিদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৮ সেপ্টম্বর’২০২৩ তারিখে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা এবং মামুনুর রশিদ তার বোন সেতারা বেগম বাদী হয়ে অপরাপর ওয়ারিশদের পরামর্শে দিনাজপুর সহকারী জজ আদালতে হারুন ও সাফেয়া রশিদের বিরুদ্ধে ২০৩/২০২৩ অন্য, সৃজনকৃত দলিল দস্তাবেজ বাতীল করনসহ চিরস্থায়ী ডিক্রির জন্য আরও একটি মামলা আনয়ন করেছেন এবং মামলাগুলো চলমান আছে।
এতদ্ব সত্ত্বে আদালতের নোটিশ প্রাপ্তির পরেও গত বুধবার ( ১২ অক্টোবর-২৩) বিকেলে হারুন উর রশিদ এবং সাফেয়া রশিদ ঐ জমি রেজিষ্ট্রি প্রদানের জন্য অবৈধ প্রভাব বিস্তার পুর্বক পেশী শক্তিসহ পুলিশ প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে তাদের অজ্ঞাত ক্ষমতাবলে ব্যবহার করে বীরগঞ্জ সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে দিনভর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
সাব রেজিষ্ট্রার হারুনের মনোনিত দলিল লেখক হাসিনুর রহমান হাসিম কে জানিয়ে দেন মামলা জনিত কারনে উক্ত জমি রেজিষ্ট্রি করা হবে না। তাদেরকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এ ব্যপারে হারুন ও সাফেয়া রশিদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।