খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই দিনাজপুর-৪ (খানসামা ও চিরিরবন্দর) আসনটি বেশীরভাগ আওয়ামীলীগের দখলে ছিল। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ভোটের লড়াইয়ে না আসায় আওয়ামীলীগের কৌশলগত কারণে নৌকার প্রার্থীর সাথে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়াইয়ে নামায় ভোটের মাঠ জমে উঠেছে। এ আসনে আওয়ামীলীগেরসহ ৪জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
তবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ (খানসামা ও চিরিরবন্দর) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সদ্য পদত্যাগ করা চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম তারিকের নির্বাচনী প্রচারণায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে নিজ দলের আওয়ামীকর্মীরা।
এ আসনে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীক নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম তারিক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোনাজাত চৌধুরী মিলন(লাঙ্গল) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) প্রার্থী আজিজা সুলতানা (আম)।
তবে এ আসনে মূল লড়াইয়ে নৌকার মাঝি আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও স্বতন্ত্র ট্রাক মার্কার প্রার্থী তারিকুল ইসলাম তারিক আছেন। জোরে সোরে আওয়ামী কর্মী-সমর্থকরা নিজের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং চালাচ্ছে। কিন্তু জাতীয় পার্টি ও এনপিপি প্রার্থী নির্বাচন করলেও তাদের প্রচারনায় পিছিয়ে।
নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়, খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শেখ রফিকুল ইসলাম, আংগারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা শাহ এবং চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আলিম সরকার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের পক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাড. শামসুর রহমান পারভেজ, খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রতœ বিএসসি ও আমিনুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা ও ধীমান দাস, চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, আউলিয়াপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম, অমরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন গাজীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ কাজ করছে।
নির্বাচনে প্রকাশ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের এই বিভক্তিতে দোটানায় পড়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান সংসদ সদস্য তাঁর ব্যক্তি মুষ্টিমেয় কিছু লোক দিয়ে দল ও তাঁর কার্যক্রম পরিচালনা করে তাই দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করছে। সেই সাথে দলীয় বিধিনিষেধ না থাকায় নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে কাজ করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী বলেন, হাতেগোনা কিছু লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। আর অধিকাংশ নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আছে।
বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্যে উল্লেখ করেন এই দুই নেতা।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় ভাবে কাজ করা জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাড. শামসুর রহমান পারভেজ বলেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক করতেই নৌকা মনোনীত প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর উৎসাহ প্রদান করে ওবায়দুল কাদের ভাই নিয়মিত বক্তব্য দিচ্ছেন। দলীয় প্রধান ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশনা অমান্য করে যারা হুমকি-ধমকি দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন তারা নির্দেশ অমান্য করছেন। তাই এসবে কর্ণপাত না করে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা করছে নেতাকর্মীরা।