পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\ দিনাজপুরের পার্বতীপুরে এবার এক শ্রেনীর অসাধু নামলা গমচাষি কচি গমের গাছ ঘাস আকারে বিক্রি করছে দেদারছে। ফলে গম আবাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এর কারন অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু লোভাতুর কৃষক সরকার দেয় গমের বীজ, সার ব্যবহার করে গমের চাষ করলেও একরকে একর গমের গাছ, ঘাস আকারে গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছে।
পার্বতীপুর উপজেলার ফরিদপুরের কৃষক জমিরউদ্দীনের সাথে কথা হলে জানান, গমের আবাদটা এবার আমরা নামলা করে ফেলেছিলাম। ইরি ধান লাগাতে যেন ফের নামলা না হয় সে কারনে ঘাস আকারেই বিক্রি করে দিচ্ছি। কেন নামলা করে গম লাগিয়েছিলেন, এর সঠিক জবাব দিতে বিরত থাকেন তিনি। বাজারে এক আটি গমের গাছ ঘাস আকারে কৃষকরা বিক্রি করছেন, ২৫-৩০ টাকা মূল্যে।
একটি নিরীক্ষায় দেখা যায়, এবারে পার্বতীপুর উপজেলায় গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০৫ হেক্টর জমি। যেখানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো আনুমানিক ৭৫২ মেট্রিকটন গম। এ লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৯০০ জন কৃষককে ষাট টাকা কেজি দরে ২০ কেজি করে গমের বীজ, ১০ কেজি ডেপ সার ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
সরকারের দেয়া সহায়তায় শুধুমাত্র গমের বীজের ক্ষেত্রেই কৃষককে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ১০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়াও সারের জন্যে ভর্তুকির পরিমাণ প্রায় ২লক্ষ ৫০হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, ভর্তুকির আওতায় কতিপয় অসাধু কৃষকরা নামলা করে গমের আবাদ করেছে বলে অন্যান্য কৃষকের দাবি। যে কারনে তারা গমের শস্য ঘরে তোলার আগেই গমের গাছ ঘাস আকারে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে সরকারের গচ্চা গেছে প্রায় ১৪লক্ষ টাকার মত শুধু গম আবাদের ক্ষেত্রেই। যে সমস্ত কৃষক নিজস্ব বীজ বা নিজস্ব অর্থায়নে গমের চাষাবাদ করেছেন, তারা ঘাস আকারে বিক্রি করেননি। কৃষকরা সাধারনত রোপা ধান কাটার পর বছরে একবার গম লাগায়। আর তা শুরু হয় অক্টোবর মাস থেকে, চলে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে, সর্বশেষ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত গম লাগানো। যারা ডিসেম্বর পর্যন্ত রোপন করে তাদের গম আবাদ নামলা হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিব হোসেন জানান, আমাদের সমাজে কিছু অসাধু মানুষতো থাকেনই। তাছাড়া গম ও ভুট্টার ক্ষেত্রে পশু খাদ্যের একটা অপশনও রয়েছে।