রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও) থেকে মোবারক আলী ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচির(ইজিপিপি) তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে কোন ধরনের প্রচার প্রচারণা ছাড়াই গোপনে এই তালিকা করা হচ্ছে। এতে গরিব অসহায় দুস্থ শ্রেণীর মানুষেরা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইজিপিপি নীতিমালার-৩.৭ এর(ঘ)তে বলা রয়েছে ইউনিয়ন কমিটি উপকারভোগী তালিকাভুক্তির শুরুর তারিখ এবং নিয়মাবলী সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার,স্থানীয় ব্যাংক,পোষ্ট অফিস,স্কুল এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের মাধ্যমে জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। অথচ এসব নীতিমালা তোয়াক্কা না করে। খেয়াল খুশি মতো তালিকা করা হচ্ছে। জানা গেছে,রাণীশংকৈল উপজেলায় এবারে ৮টি ইউনিয়নে মোট ১১শত ৯৪ জনের নামের তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
উপজেলার অনেক অসহায় দুস্থ মানুষ ইজিপিপির তালিকায় নাম অন্তভুক্তির বিষয়টি জানেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নন্দুয়ারের একরামুল,হোসেনগাঁও এলাকার আব্দুল কুদ্দস,বাচোর ইউনিয়নের ফেন্সি বলেন, ৪০ দিনের মাটি কাটায় নাম তালিকা হচ্ছে। এটা আমরা জানি না। জানতে চাইলেও কেউ কিছু বলছে না। শুনছি কোন ধরনের প্রচার প্রচারণা ছাড়াই গোপনে উৎকোচের বিনিময়ে নামের তালিকা করা হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও গোপনে টাকার বিনিময়ে নাম সংগ্রহ করছে, আমজুয়ান পশ্চিম পাড়ার এক মহিলা স্বর্ণের জিনিস বিক্রি করে ৭হাজার টাকা এক ইউপি সদস্যকে দিয়েছে। এদিকে দ‚যোর্গ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকা হালনাগাদের কথা বলা হলেও ঢালাওভাবে তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে মোট নামের ৩০ শতাংশ নামের ভাগ নিয়েছে। এ নামগুলো নিয়ে বেশ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সুবিধাবঞ্চিত নারী বলেন, টাকা না দিতে পারায় তিনি ৪০ দিনের কর্মসুচিতে নাম দিতে পারেননি। স্থানীয়দের দাবী নিয়মনুযায়ী সভা আহবান করে সকলের উপস্থিতিতে সত্যিকারের সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা ইজিপিপিতে অন্তুভুক্ত করা হোক। বাচোর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব প্রদিপ কুমার বর্ম্মন সোমবার মুঠোফোনে বলেন, রাজনৈতিকদলসহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বার এ তালিকার নাম জমা করছেন। তবে কে কয়টি নাম পেয়েছে এ তথ্য চেয়ারম্যান সাহেব বলতে পারবে। রাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরৎ চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলায় সভার মাধ্যমে ইউএনও যা নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই তালিকা করা হচ্ছে। ইউএনও রাজনৈতিক দলকে কিছু নামের ভাগ করে দিয়েছে সেটাও রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ তালিকা প্রণয়ন করে তাকে জমা দিলে তিনি সেটি ফেইসবুকে প্রকাশ করবেন। ৭দিনের মধ্যে কারো অভিযোগ থাকলে তিনি সেটি যাচাই বাছাই করে বাদ দিবেন। এদিকে রাজনৈতিক দলকে ইজিপিপি তালিকায় নামের ভাগ দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন,রাজৈনৈতিক দলকে নামের ভাগ দিয়েছে কিনা সেটি তিনি জানেন না। এটি ইউনিয়ন পরিষদের ব্যপার।