বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধি: আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সহ পাশের এলাকায় কোরবানি পশু বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। করোনা মহামারি ২য় ঢেউয়ের সময়ে উপজেলায় অনলাইনে এবারো কোরবানির পশু বেচা-কেনার হাট চালু করেছে বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস। তাই হাটে না গিয়ে নিজের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘর থেকে বসে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাকাটা করা যাবে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ৭জুলাই ২০২০ইং সালে ষরাবংঃড়পশ সধৎশবঃরহম২১৬ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পেইজ খোলা হয়েছে। যে পেইজের সাথে উপজেলার বিভিন্ন খামারী, মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ যুক্ত আছেন। সেখানে খামারীদের বিক্রয়যোগ্য পশুর ছবি, সম্ভাব্য ওজন, বিক্রেতার নাম-ঠিকানা, মোবাইল নাম্বারসহ পোস্ট করা হচ্ছে। সেখান থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো পশু ক্রয় করতে পারবেন। সুজালপুর ইউনিয়নের খামারী শেখ সাদী জানান, গতবছর আমরা কোরবানি পশু বিক্রি করে লাভবান হয়েছিলাম। এবার সেই লাভের আশায় গরু, ছাগল পালন করেছি। তবে গতবারের মত এবারো করোনা মহামারিতে এসব পশু বিক্রি নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের উদ্যোগে অনলাইন কোরবানি পশুর হাট করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আমাদের বিক্রয় করা পশুর ছবি, বিক্রেতার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার দিলে ক্রেতারা বাড়ি থেকে এসে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে আমাদের অনেক ভালো হচ্ছে। যদি এই কার্যক্রম চলমান থাকে এবং আমরা সবগুলো পশু এভাবে বিক্রি করতে পারি তাহলে লাভবান হবো। উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোঃ ইউনুস আলী জানান, খামারীদের জন্য কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে যে অনলাইন কোরবানি হাট চালু করেছি সেটাতে ভালো সাড়া পাচ্ছি। কেউ যাতে আর্থিক লেনদেন কিংবা অন্যান্য দিকে প্রতারিত না হয় সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। এর ফলে খামারীদের পশু বিক্রি করতে খরচ কম লাগবে এবং তারা কিছুটা হলেও লাভবান হবেন।তিনি আরো জানান, যেহেতু কোরবানি পশুর হাটে ব্যাপক মানুষ ও গরুর সমাগম ঘটে। এতে করে শুধু মানুষের মাঝে নয় পশুদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস হতে পারে। সেই কারণে সাধারন মানুষ ও পশুকে সুস্থ রেখে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবীদ মো. মুহিববুর রহমান জানান, প্রাণী সম্পদ অফিসের পরার্মশে সর্ম্পূণ প্রাকৃতিকভাবে পশুগুলো লালন-পালন করছেন এখানকার খামারীরা। তবে খামারীরা যাতে এই করোনা মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে কোরবানি পশুর হাটে না যেতে হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা প্রাণী সম্পদ অফিসের উদ্যোগে অনলাইন কোরবানি পশুর হাট কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। যাতে করে ক্রেতা-বিক্রেতা ঘরে বসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের পছন্দের পশুটি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন। এই কার্যক্রম চালুর পর থেকে স্থানীয়দের মাঝ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি আমরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর কাদের জানান, এই উপজেলায় এবার কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু-মহিষ ৬হাজার ৯শত২২টি ও ২হাজার ১শত ১২ টি কোরবানি ছাগল-ভেড়া পশুর চাহিদা থাকলেও তার বিপরীতে এখানকার ৪হাজার ৯শত ৭৭ খামারী গরু-মহিষ ৯হাজার ৭শত ৬৮ টি ও ৬হাজার ৫শত ২৭টি ছাগল-ভেড়া লালন-পালন করেছেন। গতবছরের মত এবারো করোনা সময়ে অনেক ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস। এটি আমাদের উপজেলার প্রান্তিক থেকে শুরু করে সব ধরনের খামারীদের উপকারে আসবে।