বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি॥ দিনাজপুরের বীরগঞ্জে মহামারি প্রাণঘাতি করোনার মধ্যে দেড় বছর পর সেই প্রাণ ফিরল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ক্লাসে। গতকাল রবিবার সারাদেশের মতো বীরগঞ্জেও খুলেছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে স্কুল -কলেজে বয়ে গেছে আনন্দের জোয়ার। ক্লাস হয়ে উঠেছিল মিলন মেলা। ছিল হৈ হুল্লোড়ে, আনন্দ। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শিক্ষার্থীরা এসেছে নিজ নিজ স্কুল-কলেজে। সবাই ছিল মাস্ক পরিহিত। প্রথম দিনেই সরকারী নির্দেশনা মেনে ব্যাপক উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারী নির্দেশনা মেনে বীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষা উপযোগী করে গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ও পৌরসভা সহ বীরগঞ্জ উপজেলার ২৩১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৪টি মাদ্রাসা, ৭০টি বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬টি কলেজ ও ৩৯টি কেজি স্কুল খোলার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ১৮ মাস করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ময়লা আবর্জনা ও ঝোপ ঝাড়ে পরিনত হয়েছিল এক অন্ধ কুঠিরের মত। এ অবস্থা থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে এসেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জীবন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সংবাদ পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফিরে এসেছে প্রাণঞ্চল্লতা। সরকারের ঘোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জন্য ২টি করে মাস্ক বাধ্যতা মূলক করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্বর মাপার জন্য থার্মোমিটার রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বীরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক বিদালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফা ও একাংশের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ প্রতিটি বিদ্যালয় পরির্দশন করেছেন এবং পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতার জন্য সন্তোষ প্রকাশক করেন। শিক্ষা বিভাগ থেকে নির্দেশনা থাকায় বিদ্যালয়কে জীবানু মুক্ত করে শিক্ষা উপযোগী করে তোলার মধ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খোলা হয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার, তাপ মাত্রা মাপার যন্ত্র এবং একটি আলাদা কক্ষ আই সোলেশনের জন্য ঠিক করে রাখা হয়েছে। শিবরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সজল জানান, সরকার ঘোষিত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বিদ্যালয় খোলা হচ্ছে। বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কন্দর্প নারায়ন রায় বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে শিক্ষা উপযোগী করে প্রস্তুতি রেখেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সেই নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। তবে তারা ঠিকমত সরকারি আইন মানছেন কি না তা নজরদারীও রাখা হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস হইতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরজমিনে গিয়ে আমার তদন্ত করছি বিদ্যালগুলি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখা হয়েছে কি না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন শিশুরা যেন আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারে সে জন্য শিক্ষদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া আছে এবং কোন প্রকার গুজবে যেন শিশুরা বিভ্রান্তি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে শিক্ষকবৃন্দের দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে কি না এবং পরিচালিত হচ্ছে কি না সে দিকে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী রাখা হয়েছে।