ঠাকুরগাঁও: ১৯৪০ সালের দিকে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকায় একটি বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৮-৭৯ সালের দিকে এ বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর চালুর লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালে বিমানবন্দরটি সংস্কার করা হয়। পরে সেটি আর চালু হয়নি। ১৯৭৭-১৯৮০ সাল পর্যন্ত ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইট যাতায়াত করেছে। তৎকালীন আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বিমানের লোকসান হয়েছিল। যা খুব স্বাভাবিক ছিল। অতঃপর বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর মাঝে ৪১ বছর গড়িয়েছে, অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। বন্দরটি চালু হওয়া এখন সময়ের দাবী।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের প্রায় ৮০শতাংশ যাত্রী ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় এবং দিনাজপুরের। ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর থেকে ১০-১৫ মিনিটে ভারতের বাগডোগরা বিমানবন্দরে অবতরণ করে, ট্রানজিট ফ্লাইটে বেঙ্গালুরুসহ আশেপাশের কয়েকটি দেশে যাওয়া সম্ভব। অথচ একটি সময়োপযোগী আন্তরিক সিদ্ধান্তের জন্য বঞ্চিত হচ্ছি ৩ টি জেলার মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে অর্থনীতি। ২০১৬ বিমানবন্দরটি চালু করার কথা থাকলেও আর চালু হয়নি। সেসময় সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ছিলেন রাশেদ খান মেনন। এখানে এসে তিনি ঠাকুরগাঁও এর বিমানবন্দরের অবকাঠামো পরিদর্শন করেন। পরে সেখানে তিনি বিমানবন্দর চালু করার বিষয়ে নানা পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।
ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় রানওয়ে ছাড়া অধিকাংশ জমি ফসলের মাঠ, আর বেহাত হয়েছে বেশ কিছু জমিও। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিন ধরে এ বিমান বন্দরটি চালুর দাবি করে আসলেও আলোর মুখ দেখছেনা। ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটিতে ওড়েনা বিমান। তাই বলে মুখ থুবড়ে পড়ে নেই এ বন্দরটি। জমি গুলোতে পুরোদমে চলছে চাষাবাদ। বন্দরের জমি লীজ নিয়ে ভুট্টা, গম আলুসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন স্থানীরা। রানওয়েতে কৃষকেরা গম, ভুট্ট্রা, ধান ও অন্যান্য ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন।
সভায় ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন, ঐ সময় ২০১৬ ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ ইয়াসিন আলী, তৎকালীন জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস, তৎকালীন পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে আড়াই’শ একর জমির ওপর নির্মিত এ বিমানবন্দরে বিমান চলাচলের সব ধরনের অবকাঠামো রয়েছে। এটি চালু করতে তেমন কোনো খরচ হবে না। এটি চালু করার জন্য যা দরকার, আমরা তিন মাসের মধ্যে সে কাজ শুরু করব।’ সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করার অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তীতে বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রী এ্যাড. নুরুল ইসলাম সুজনও বিমানবন্দন পরিদর্শন করেন।
পঞ্চগড় স্থলবন্দর চালু হলে এ এলাকায় বিমান লাভবান হবে। প্রসঙ্গত, ১৯৪০ সালের দিকে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকায় একটি বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৮-৭৯ সালের দিকে এ বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর চালুর লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালে বিমানবন্দরটি সংস্কার করা হয়। পরে সেটি আর চালু হয়নি। বর্তমানে বিমানবন্দরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।