তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
পঞ্চগড় জেলার হিমালয়কন্যাখ্যাত তেঁতুলিয়া উপজেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন। শুক্রবার সকাল ৯টায় মৌসুমের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। গত বৃহস্পতিবার ৯.৬ ও বুধবার ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তীব্র শীত ও ভারি শৈত্য প্রবাহের কারণে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া দেশের শীতপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিণত হয়েছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারী এই দুই মাসে ৪৫ দিনই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দেয়া তথ্যমতে, গত বছর ডিসেম্বর মাসের ২৭ দিনই সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। যার ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল ১০ দিন, ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল ৫ দিন। চলতি ২০২২ সালের ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল ৫ দিন ও ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল ৯ দিন। চলতি মেীসুমের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শুক্রবার।
কাঞ্চনজঙ্ঘা-হিমালয় পর্বত সন্নিকটে হওয়ায় উত্তরি -পূবালী শীতল হাওয়ায় গত বৃহস্পতিবারের থেকে এক লাফে তাপমাত্রা নামল ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে হালকা কুয়াশা থাকলেও শীতের তীব্রতা অনুভূত হতে থাকে। রাত থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভারি শৈতপ্রবাহের ঠান্ডার প্রকোপে বিপাকে পড়েছে সর্বসাধারণ মানুষ। খড়-কুটো আগুনে জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যায় প্রান্তিক জনপদের মানুষগুলোকে।
হঠাৎ করে তাপমাত্রা নিচে নামায় ঘরের বিছানা, মেঝে ও আসবাবপত্র বরফ হয়ে উঠছে। শীত দূর্ভোগে প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছে শিশু থেকে বয়োজৈষ্ঠ্যরা। বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। শীতের তীব্রতার কারণে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন দিন মজুর, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক থেকে নানান পেশাজীবি মানুষগুলো। তারা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বরফের মতো ঠান্ডা লাগে। ঠান্ডার কারনে কাজে যেতে পারছি না।
শীত দূর্ভোগে কর্মহীন কিছু মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে বেসরকারি এনজিও ইএসডিওকে। তারা গত মঙ্গলবার এ উপজেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শীত দূর্ভোগে কর্মহীন হয়ে পড়া ৩শত ব্যক্তিদের সাতদিনের সহযোগিতা হিসেবে ২ হাজার ৪শত ৫০ টাকা প্রদান করেছে।
শীতের তীব্রতার কারণে বেড়েছে শীতজনিত নানান ব্যাধি। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে জ্বর-সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, সাইনোসাইটিস, ইসনোফিলসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৬টায় ৭ দশমিক ৩ রেকর্ড হয়। যা এ মৌসুমের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। রেকর্ড হয়েছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশের মেঘ সরে যাওয়ার কারণে ভারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এরকম দু’চারদিন চলতে পারে। ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।