হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে কর্মসৃজন প্রকল্পের ভূয়া শ্রমিকের নামে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে হরিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস এম এ করিমের বিরুদ্ধে।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয় এই প্রকল্প। ১৫ এপ্রিল শনিবার থেকে বকুয়া ইউনিয়ন পরিষদে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) আওতায় ৪০ দিনের কর্মসূচিতে রাস্তায় মাটি কাটার কাজ চলমান আছে।
বকুয়া ইউনিয়নের ১,২,৩নং ওয়ার্ডের মাস্টাররোল খাতায় ৪৭ নারী-পুরুষের নাম আছে। প্রতিদিন ৫০০ টাকা পারিশ্রমিক। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) বকুয়া ইউনিয়নের
৩নং ওয়ার্ডের ধুকুরিয়া গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে বেতনা বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিম পাশের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ মিলে বিজিবি ক্যাম্পের রাস্তা নির্মাণের কাজ করছেন। সেখানে উপস্থিত একটি খসড়া খাতায় ১,২, ৩নং ওয়ার্ডে মোট ৪৭ জন নারী-পুরুষের নাম আছে।
হাজিরা খাতা থেকে দেখা যায়, উপস্থিত আছেন ৪৫ জন। অনুপস্থিত ছিল ২জন শ্রমিক।
অনুপস্থিত থাকা শ্রমিক ইসমাইল হোসেন(৫০) জানান, ৪০দিনের কর্মসূচির তালিকায় আমার নাম রয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি কৃষক মানুষ আমার ২/৪ বিঘা জায়গা জমি রয়েছে তাতেই চাষাবাদ করি।
অনুপস্থিত থাকা আরেক শ্রমিক জাহানারা বেগম(৪২)কে পাওয়া গেল তার বাড়িতে। তাকে ৪০দিনের কর্মসূচিতে মাটি কাটার কাজ করছেন কি না জিজ্ঞাসা করা হল সে জানায় যে আমি একজন গৃহিণী, আমি কোনো দিনই মাটি কাটার কাজ করিনি।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ৪০দিনের কর্মসূচি প্রকল্পে অনুপস্থিত থাকা ঐ দুই শ্রমিকের নামে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
ধুকরিয়া ৩নং ওয়ার্ডের ৪০দিনের কর্মসূচির সাবেক সর্দার আবুল হোসেন জানান, ধুকরিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম এবং আবুল হোসেনের ছেলে ইসমাইল হক কোনো দিনই মাটি কাটার কাজ করেনি।
৩নং ওয়ার্ডের বতর্মান কর্মসূচির সর্দার মোশাররফ হোসেন বলেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহেরের নির্দেশে আমি তাদের উপস্থিতি দেখিয়েছি।
৩নং ধুকরিয়া ওয়ার্ডের মেম্বার মেহবুব আলম বলেন, আমি যতদিন মেম্বার রয়েছি, ইসমাইল এবং জাহানারাকে কোনোদিন কাজ করতে দেখিনি।এই কথাটা প্রতিটি শ্রমিক জানে। তাদেরকেও জিঞ্জাসা করতে পারেন।
ট্যাগ অফিসার, হরিপুর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। অভিযোগ শুনলাম, ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।
বকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্পের সভাপতি মো.আবু তাহের বলেন, আপনারা যেদুটি নাম বললেন ঐ নামগুলো পিআইও দিয়েছে
যদি অনিয়ম থেকেই থাকে তাহলে এটি পিআইওর বিষয়।
গোপন সংবাদে আরও জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১২জন ভূয়া শ্রমিক দিয়ে টাকা তোলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস এম এ করিম।
হরিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এস এম এ করিমের সঙ্গে বারবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ কে এম শরীফুল হক বলেন,বিষয়টি খতিয়ে দেখছি প্রমাণ হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।