মানুষের মূমুর্ষ মূহুর্তে প্রয়োজনীয় রক্তের অভাবে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে একজন রক্তযোদ্ধাই পারে জীবনের আলো দিতে। কোন স্বার্থ ছাড়াই জীবন বাঁচাতে ও হাসি ফুটাতে নি:স্বার্থ উপহার রক্তদান। প্রাপ্ত বয়স্ক একজন নিয়মিত সময়ে রক্ত দিলে শরীরের কোন ক্ষতি নেই বরং উপকারিতা রয়েছে অনেক।এই রক্তদান কাজটি সবাই না করলেও নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে এসেছে কিছু তরুন যুবক রক্তযোদ্ধা। গড়ে তুলেছেন রক্তদানের প্লাটফর্ম। নাম দিয়েছে রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থা। যাতে দিনে বা রাতে ফোন কলে ছুটে আসতে পারেন রোগীর রক্তের প্রয়োজনে।
মানবদেহে রক্ত ছাড়া এক মুহূর্ত বেঁচে থাকা অসম্ভব।অনেক সময় এমন পরিস্থিতি হয় যে, রোগীর জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় রক্ত পাওয়া দুষ্কর। সে সময়টা ভোগ করতে হয় রোগীর স্বজনদের। রোগীর জীবন বাঁচাতে তারা ছুটোছুটি করে। এমন মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়াতে কাজ করছে কিছু তরুণ যুবক। কিন্তু এবার মানবিক কাজে স্বামীর সাথে গৃহবধু স্ত্রীও ছুটে যাচ্ছেন রক্তদান করতে।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বøাড বিভাগের নোটিস বোর্ডসহ বিভিন্ন হাসপাতাল,সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও প্রায় মানুষের মুখে ছড়িয়ে পড়েছে দিনাজপুর রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থার নাম। ২০২০সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠার পর সদস্য সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দিনাজপুরে নিয়মিত রক্তদান করছে ১০০জন এবং সারাদেশে প্রায় ৫ হাজার সদস্য রয়েছে। সেই সাথে রক্তদানে উপকারিতা তুলে ধরে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করেন এই মহৎ কাজে। অপরদিকে সময় মত রক্ত পেয়ে সন্তুষ্টির কথা জানালেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থা, দিনাজপুর সভাপতি রবিউল ইসলাম রাজু ও সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জানান, রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থার দুইজন সদস্য, দম্পত্তি কাওসার আলী ও জেবুন নাহার জুঁই। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর অনুরোধে নিয়মিত রক্ত ডোনেট করে আসছেন স্ত্রী। তারা দুজনেই এসেছেন একসাথে রক্ত দিতে। এভাবেই অসংখ্য নারী-পুরুষ এগিয়ে আসছেন রক্তদানে।তবে এদের মধ্যে কলেজ পড়–য়া যুবক-যুবতীদের সংখ্যাই বেশি।রক্তদানে এগিয়ে আসতে পেরে তারাও জানালেন আত্মতৃপ্তির কথা।
এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,দিনাজপুরের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা: এ.বি.এমকামরুল হাসান বলেন, প্রাপ্ত বয়স্ক একজন নিয়মিত সময়ে রক্ত দিলে শরীরের কোন ক্ষতি নেই উল্টো এর উপকারিতা অনেক রয়েছে। এই মহৎ কাজে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। তিনি আরও জানান, প্রতিবছর ১৪জুনকে“বিশ^ রক্ত দাতা দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে বিশে^র বিভিন্ন দেশ। কোন স্বার্থ ছাড়াই যারা শুধু একজনের জীবন বাঁচাতে ও হাসি ফুটাতে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট ও নি:স্বার্থ উপহার রক্তদানে এগিয়ে আসেন মুলত তাদের সম্মানার্থে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।