রবিবার , ৬ জুলাই ২০২৫ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খানসামা উপজেলা আ’লীগ কার্যালয় এখন গণশৌচাগার !

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
জুলাই ৬, ২০২৫ ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভেঙ্গে পড়ে ক্ষমতার দাম্ভিকতার দেয়াল। অভিজাত ভবন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে অসংখ্য দলীয় কার্যালয় ক্ষোভের আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টিও পরিণত হয়েছে নির্মম নিদর্শনে। এক সময়ের ক্ষমতার ভরকেন্দ্র ছিল এ দলীয় কার্যালয়টি। এখন সেটি ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে। কার্যালয়ের সামনে পসরা সেজে বসেছে চা, পান, বিড়ি-সিগারেটের দোকান। বেহাল ভবনটি সাধারণ মানুষ গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছেন।
সরজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পাকেরহাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টির দেয়ালে আগুনে পোড়া দাগ এখনও স্পষ্ট। স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেজুড়ে ছড়িয়ে-ছটিয়ে আছে পুড়ে যাওয়া কাগজপত্র আর ছাইভস্ম হয়ে যাওয়া কাঠ, ভাঙা কাঁচ। ভবনের স্টিলের নামফলক খুলে নিয়ে গেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। মুছে ফেলা হয়েছে ‘আওয়ামী লীগ’ নামের চিহ্ন। ভবনটির দক্ষিণ দিকে সামনের একাংশ দখল করে বসানো হয়েছে একটি অস্থায়ী দোকান। এ দোকানে চা-পান, বিড়ি-সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। কার্যালয়ের নিচতলাকে গণশৌচাগারের মতো করে ব্যবহার করছেন লোকজন। এই ভবনেই চলত রাজনৈতিক কর্মকান্ড, বৈঠক, দলীয় সভা, তদবির ও ক্ষমতার লেনদেন। এখন সেই ভবন ইতিহাসের এক নির্মম পরিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ভবনটি দেখিয়ে বলেন, এ ভবনে বসেই মানুষ মারার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতো। আরও সিদ্ধান্ত হতো-পুলিশ কাকে ধরবে এবং কার ওপর কি মামলা দেবে। এ ভবন থেকেই নির্যাতনের নকশা তৈরি করা হতো। আবার কেহ কেহ বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে দেশের মানুষকে শোষণ-লাঞ্ছিত করেছে এখন তারই ফল ভোগ করছে। স্থানীয় আরও কয়েকজন বলেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে দলীয় কার্যালয়গুলো হয়ে উঠেছিল সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দুতে। সেখানকার সিদ্ধান্তগুলো অনেকাংশেই জনস্বার্থবিরোধী হতো। দলীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়া হতো এবং মানুষের কন্ঠ রুদ্ধ করা হতো। মানুষের হাতে এখন সেই কার্যালয়, সেই কাঠামোই ভেঙে পড়েছে। ভবনটি দেখে মনে হয়, সময় যেন এক নির্মম প্রতিশোধ নিয়েছে। এতদিন যে ভবন ছিল দম্ভের চূড়া, এখন তা মানুষের চোখে উপহাসের প্রতীক।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যূত হলে বিক্ষোভের মুখে সারাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যালয়গুলোতে ক্ষোভের হামলার ঢেউ আছড়ে পড়ে। সেই একই সময়ে ক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ে খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টিতেও। কার্যালয়টিতে চালানো হয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। এ ভবনের আসবাবপত্র বের করে এনে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। উপড়ে ফেলে স্টিলের নামফলক। সেই থেকে দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ, জনশুন্য ও অরক্ষিত। নেতাকর্মীরাও আর আসে না।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়ভাবে পতনের পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই এখন আতœগোপনে রয়েছেন। অনেকেই এলাকা ছেড়ে গেছেন। কেউ কেউ বিদেশে চলে গেছেন। অনেকে স্থান পরিবর্তন করে গা ঢাকা দিয়ে থাকছেন। কেউবা আবার অভ্যুত্থানপন্থি দলগুলোর সুবিধাবাদী নেতাদের ম্যানেজ করে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কয়েকজন স্থানীয় রাজনীতিবিদ বলেন, দল যখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তখন তার অফিসগুলোও জনরোেেষর শিকার হয়ে ওঠে। আজকে গণশৌচাগার ও চা-পান, বিড়ি-সিগারেটের দোকানে পরিণত হওয়া ভবনগুলো সেই বাস্তবতারই স্বাক্ষী বহন করে। কোনো রকম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই কার্যালয়টি কার্যত বিলুপ্ত। এটাই হয়ত রাজনৈতিক বাস্তবতার নিষ্ঠুর প্রতিফলন।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

রাণীশংকৈলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে শ্মশানের জমি দখল

দিনাজপুরে ভ্যান ভাড়া করে চালক হত্যা ঘটনায় আটক-২

রাণীশংকৈলে সামাজিক সম্প্রীত সভা অনুষ্ঠিত

রাণীশংকৈলে,আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত

রাণীশংকৈলে,আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত

​নরসিংদীতে কাভার্ডভ্যান-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৬

প্রথমবারের মতো তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে সুপারফুড ‘চিয়া বীজ’

ধর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে পাকিস্তানি এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের বাংলাদেশে বসবাসের কোন অধিকার নেই -মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি

বীরগঞ্জের আলোর পথে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এমপি গোপালকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেষ্ট প্রদান

কাহারোলে সাগরিকা বাসে আগুন

পীরগঞ্জে সাওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালী ও আলোচনা সভা