মো: মারুফ হোসেন, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী তন্ত্র-মন্ত্রের মধ্য দিয়ে পাতাখেলা প্রতিযোগিতা। গ্রাম বাংলার চমকপ্রদ এই খেলা দেখতে মাঠে উপচেপড়া ভিড় ছিল দর্শকদের।
শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের সর্দারপাড়া শাপলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ পাতাখেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মাঠজুড়ে ছিলো দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সেই সাথে পুরো এলাকায় ছিলো উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ৯টি তান্ত্রিক দল তাদের তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে পাতারূপী সাপকে মাঠের মাঝখান থেকে চারদিকে টানার প্রতিযোগিতা করে। প্রতিযোগিতায় যার পয়েন্ট বেশি হয় সেই তান্ত্রিক দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ী দলকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। এমন খেলা দেখে বিমোহিত ও খুশি দর্শকরা। সবার দাবি, প্রতিবছর আয়োজন হোক এমন খেলার।
খেলা দেখতে আসা তামান্না নামের এক তরুণী বলেন, আমি কখনও এই পাতাখেলা দেখিনি। আজকে প্রথম দেখলাম। আমার অনেক ভালো লাগলো। শুধু আমি না, আমার অনেক বান্ধবী এই পাতাখেলা দেখতে আসছে। আমি আয়োজকদের কাছে অনুরোধ করবো যেনো এই খেলাটি প্রতিবছর তারা আয়োজন করেন।
রমজান নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আমরা যখন যুবক ছিলাম প্রতিনিয়তই এ খেলাগুলো হতো। কালের বির্বতনে খেলাগুলো হারিয়ে গেছে। আসলে এগুলো আবারো ফিরে আনা দরকার। কারণ এগুলো মানুষকে বিনোদন দেয়। আজ অনেকদিন পর আবারো পাতাখেলা দেখতে পেরে আমি খুব খুশি।
জাহানারা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, আমরা এই খেলা অনেক আগে দেখেছি মাঝখানে ছিলো না। আজকে আমাদের গ্রামের যুবকরা এ খেলার আয়োজন করেছে আমাদের দেখতে খুব আনন্দিত আমি। তবে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় আমরা আগের মানুষ দিয়ে পাতা খেলা দেখেছি আজকে প্রথম আমরা সাপ দিয়ে পাতাখেলা দেখলাম। খুব ভালো লাগলো।
খেলায় অংশগ্রহণকারী মলিন চন্দ্র রায় নামের এক তান্ত্রিক জানান, তান্ত্রিকদের মতে, প্রাচীনকাল থেকে গুণীকরা খেলত এই পাতাখেলা। আর এজন্য যে মন্ত্র প্রয়োজন তা অতি কঠিন। তবে খেলায় পুরস্কার পাবার আশায় নয়, মানুষকে বিনোদন দিতে এবং নিজেও আনন্দ উপভোগ করতে খেলায় অংশগ্রহণ করেছি।
খেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি কানাই চন্দ্র জানান, আমরা এলাকার মানুষকে আনন্দ দিতে এবং হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার এই খেলাটি নতুন প্রজন্মকে জানান দিতেই আমাদের এই আয়োজন। খেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯টি তান্ত্রিক দল অংশগ্রহণ করেছে এবং খেলায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল।