“এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন-জরায়ু মুখ ক্যান্সার রুখে দিন”-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে সারাদেশে জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।
গতকাল বুধবার দিনাজপুরে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে ২৫০শয্যাবিশিষ্ট দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের শহীদ ডা.আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা.আসিফ ফেরদৌস জানান, দিনাজপুরে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস-এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। দিনাজপুরে মোট ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৮ জনকে ৩ হাজার ৫৪৪টি বিদ্যালয়ের মাধ্যমে কিশোরিদের এই টিকা প্রদান হবে। এইচপিভি মূলত একটি যৌনবাহিত ভাইরাস।এটি জননাঙ্গে আঁচিল (ওয়ার্টস) ও জরায়ুমুক ক্যান্সার সৃষ্টি করে। শতকরা ৯৯ভাগ জরায়ুমুখ ক্যান্সার এইচপিভি ভাইরাস দ্বারা হয়। এই ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য সরকার টিকাদান কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
তিনি আরো জানান, আজ ২৪ অক্টোবর হতে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮ কার্যদিবস সারা দেশে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। একজন নারীকে জীবনে মাত্র একবার একটি ডোজ টিকা প্রদান করা হবে। এই টিকা কৈশোরকালিন স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা.আল আমিন হোসাইন, দিনাজপুর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা.কাওসার হোসেন, ডা.জাওহা আলম অর্কসহ দিনাজপুরে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,বাল্যবিবাহ, ঘন ঘন সন্তান প্রসব, একাধিক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী (যেমন-এইডস রোগী), যে সকল নারী প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এবং সমস্যার প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নেন না তাদের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য এইচপিডি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এই টিকা জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়া ৩০ বছরের বেশি বয়স হলেই নিয়মিত জরায়ুমুখ ক্যান্সার নিরুপণ পরীক্ষা করা ও সময়মত উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে এবং কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।