বৃহস্পতিবার , ৩১ অক্টোবর ২০২৪ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বীরগঞ্জে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরু দিয়ে হালচাষ বিলুপ্তির পথে

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
অক্টোবর ৩১, ২০২৪ ৮:০৩ অপরাহ্ণ

বিকাশ ঘোষ,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধি: এক সময় গ্রামবাংলার স্বাভাবিক চিত্র ছিল গরু দিয়ে হাল চাষ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন বিলুপ্তির পথে এই পদ্ধতি। হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা হয়। অথচ দুই যুগ আগেও নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হালচাষ করে সংসারের ব্যয়ভার বহন করত দরিদ্র মানুষ।

কাক ডাকা ভোরে কৃষক গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। এ দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলার চলে আসছে। বর্তমানে বিলুপ্তির পথে পরিবেশ বান্ধব গরু দিয়ে হালচাষ পদ্ধতি। কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল, মই, হাতে গরুর দড়ি। সূর্য উঠার আগেই জমি চাষের জন্য মাঠে কৃষকের দৌড়। কৃষকের মুখে গ্রাম্য ভাটিয়ালি গানের সুর। সকালে জমির আইলে বসে গৃহিনীর পাঠানো সাজানো খাবার খাওয়া। এগুলো ছিল গ্রামাঞ্চলের মাঠের নিত্য-নৈমেন্তিক দৃশ্য। তা এখন এগুলো অতীত আর স্মৃতি। আধুনিক কৃষিযন্ত্রের যাতাকলে আজ তা প্রায় হারিয়ে গেছে। কাঠের লাঙ্গল-জোয়ালে গরুর হালের দেখতে পাওয়া বর্তমানে দুষ্কর। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের সকল উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম, পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর,ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে এক সময়ে কৃষকদের জমি চাষে একমাত্র নির্ভরশীল ছিল গরুর দিয়ে হাল চাষ এখন তা বিলুপ্তির প্রায়।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের কল্যাণী ইউনিয়নের কৃষক হোসেন আলী বলেন, এক সময় সব বাড়িতে গরু দিয়ে হালচাষ করত। এখন বিভিন্ন মেশিন দিয়ে হাল চাষ করা হয়। এখন প্রায় গরু দিয়ে হালচাষ বিলুপ্তের পথে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ডিজেলের যে দাম বেড়েছে এতে করে সামনের দিকে মেশিন দিয়ে হাল চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। এমন সময় আসতেছে সবার আবার আগের মতো গরু দিয়ে হাল চাষ করতে হবে।

একই এলাকার মরিচা ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের নিশি কান্ত রায় বলেন, জীবনের সিংহভাগ সময় কেটেছে আমার লাঙ্গল-জোয়াল আর গরুর পালের সঙ্গে। আমি ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে কাজ করি। বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা মেশিন দিয়ে হাল চাষ করি। আগে গরু দিয়ে হাল চাষ করতাম।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি বাড়ি বাড়ি হাল চাষের জন্য একাধিক জোড়া হালের বলদ, লাঙ্গল, জোয়াল ও মইসহ হালচাষের সরঞ্জাম যেন বাড়ির একটি মানান ছিল। যার বাড়িতে যত বেশি ঐসব সরঞ্জাম থাকতো, এলাকা জুড়ে তার পরিচিতি থাকতো ততো বেশি। এতে করে শোভা পেত তার বাড়ির গোয়ালঘর। এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় আর খুব একটা চোখে পড়ে না হালের বলদ, লাঙ্গল, জোয়াল। সবকিছুই এখন বিলুপ্তি হতে চলেছে।

সময় ও অর্থের সাশ্রয় এবং ঝামেলামুক্ত থাকতেই যেন লোকজন এখন গরুর হালের পরিবর্তে মাঠে মাঠে নামিয়েছে ছোট-বড় পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর চালিত যান্ত্রিক আধুনিক হালচাষ।

গরুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, কাজের লোকদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায়, গৃহস্থরা আর চায় না অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয় করতে। সময় ও অর্থ বাঁচাতে অর্থবিত্ত গৃহস্থরা ক্রয় করেছে পাওয়ার ট্রিলার এবং তারা নিজেদের হালচাষের পাশাপাশি অন্য কৃষকদের অর্থের মাধ্যমে হালচাষ করে দিচ্ছে। এতে করে গরু দিয়ে হালচাষের প্রবণতা বিলুপ্তি পথে। আধুনিকায়নের এই যুগে নতুন প্রজন্ম শুধু ছবি আর বইয়ের পাতায় পড়ে জানবে যুগের সঙ্গে কত কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

এমপিওভুক্তির দাবীতে ও ঢাকায় শিক্ষাদের কর্মসূচিতে পুলিশের অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

জাতীয় পার্টি দেশে প্রহসনের নির্বাচন চায় না … হাফিজ এমপি

বোদায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত

ঘোড়াঘাটে ব্যক্তি উদ্যোগে ৫ শতাধিক ময়লার ঝুঁড়ি বিতরণ

পঞ্চগড়ে বৃষ্টিতে ভিজে চার ঘন্টা বাংলাবান্ধা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ

দিনাজপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাবের উদ্বোধন

দিনাজপুর সদর উপজেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচী পালিত

রাণীশংকৈলে সহকারী পুলিশ সুপার সামগ্রিক কর্মমূল্যায়নে হলেন শ্রেষ্ঠ সার্কেল

রাণীশংকৈলে পিঠা উৎসব মেলার আয়োজন !