রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:- ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার কাশিপুর গাজীগড় এলাকায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা,মুক্তিযোদ্ধার সংগঠক ও প্রবীণ আ’লীগ নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন মৎস্যজীবিলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর লস্ককর। গতকাল রোববার তিনি এ মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক প্রবীণ আ’লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস আলী, যুদ্বাহত মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দীন সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবিলীগ নেতা শেখ আজগর লস্কর এর বাবা ইদ্রিস আলীর মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অবদানের কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, ইদ্রিস আলী ব্রিটিশ আর্মিতে থাকার সুবাদে যুদ্ধের কৌশল ভাল জানতেন। সেই কৌশল কাজে লাগাতে স্বাধিনতার যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেন। এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস আলী বলেন, শেখ আজগর লস্কর এর বাবা ইদ্রিস আলী এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষন দিয়েছেন। তিনি দেশ স্বাধীনের আগে থেকেই বাংলাদেশের পক্ষে স্বাধীনতা চেয়েছেন। এ ছাড়াও এই এলাকায় কয়েক শতাব্দী থেকে উনার পূর্বপুরুষের বসবাস করে আসছেন। তিনি বাংলা ভাষা ভাষির বাংগালী।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফজলুল হক বলেন, আমি ছাত্র অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই এবং দেশ স্বাধীন করে যখন বাড়িতে ফিরে আসি। পরবর্তীতে খবর পেলাম শেখ আজগর লস্কর এর বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়ায় উনাকে পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে। সেই থেকে আমরা জানি লস্কর একজন শহীদ পরিবারের সন্তান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোবারক আলী বলেন, শেখ আজগর লস্কর এর বাবা ইদ্রিস আলীকে বিহারিরা হত্যা করে। এর অন্যতম কারন হলো তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছিলেন। ইদ্রিস আলী নিজেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। উনার বাবাকে যখন পাকিস্থান আর্মিরা গুলি করে মারে তখন অনেকেই ভায়ে পালিয়েছিল। আমি দেখতে এসেছিলাম কিন্তু ভয়ে কাছে যেতে পারি নাই। উনার লাশ বাড়ির পাশে পরে ছিল।
সেনা মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিন বলেন, ইদ্রিস আলী ছিলেন একজন প্রকৃত দেশ প্রেমিক। তিনি যুদ্ধ শুরুর আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। এ জন্য এলাকার কিছু বিহারি ও রাজাকার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছিলে। সেই জায়গা থেকেই যুদ্ধ চলাকালীন শেখ আজগর লস্কর এর বাবাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এখন উনার কবরের পাশেই আমার বাড়ি।
এ সময় কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবি লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর লস্কর তার বাবার স্বাধীনতার সময়কার অবদানের কথা মুক্তিযোদ্ধা মুখে শুনে নিজেকে খুব গর্ববোধ মনে করে বলেন, আমার বাবার মত যারা দেশ স্বাধীনের জন্য গিয়ে রাজারকারদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের আমরা সব সময় শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবো এবং তাদের যে সোনার বাংলা গড়ার ইচ্ছে ছিল তা পুরণে সবাই একত্রে কাজ করবো বলে তিনি মন্তব্য করেন।